যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) সংস্থাটি তাদের কার্যক্রম আরও জোরদার করতে নতুন কর্মী নিয়োগ করছে এবং প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতেও আনছে পরিবর্তন। সম্প্রতি এই খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
মূলত, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে অভিবাসন নীতি কঠোর করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে ICE-এর প্রায় ৬,৫০০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন, যাদের প্রধান কাজ হল— যারা আমেরিকান নাগরিক নন এবং বিভিন্ন কারণে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি নেই, তাদের চিহ্নিত করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। এই সংখ্যা আরও বাড়াতে সংস্থাটি ব্যাপক কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য, বছরের শেষ নাগাদ আরও ১০,০০০ নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ করা। এর জন্য আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে এবং বিভিন্ন কর্মসংস্থান মেলায় বিজ্ঞাপনও দেওয়া হচ্ছে।
নতুন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ব্রান্সউইকে ফেডারেল ল এনফোর্সমেন্ট ট্রেনিং সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নতুন কর্মকর্তাদের জন্য স্প্যানিশ ভাষার আবশ্যকীয়তা কমানো হয়েছে, যাতে প্রশিক্ষণের সময়সীমা পাঁচ সপ্তাহ কমানো যায়। এছাড়া, প্রশিক্ষণ আরও সহজ করতে এবং ফিল্ড অফিসে কাজ করার সুযোগ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং সহিংসতার বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
কারণ, অভিবাসন বিষয়ক অভিযানে প্রতিরোধের সম্মুখীন হওয়ার ঘটনা বাড়ছে। সংস্থাটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছর একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে।
কর্মকর্তাদের সুরক্ষার জন্য বুলেটপ্রুফ পোশাক ও হেলমেট সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া, গ্রেপ্তারের সময় কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা দল পাঠানোর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনার জন্য বিশেষায়িত দল গঠন করা হচ্ছে, যাদের সামরিক ধাঁচের পোশাক ও অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই দলগুলো কঠিন পরিস্থিতিতে সহায়তা করতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের আটকের কাজে সহায়তা করবে।
বর্তমানে প্রায় ৪৫০ জন কর্মকর্তার এই বিশেষ প্রশিক্ষণ রয়েছে। এই দলগুলোকে লস অ্যাঞ্জেলেস, ওরেগনের পোর্টল্যান্ড এবং ওয়াশিংটন-সহ বিভিন্ন শহরে মোতায়েন করা হয়েছে।
নতুন কর্মীদের অভিবাসন আইন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানো হয়। চতুর্থ সংশোধনী অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কারও বাড়িতে প্রবেশ করা যায় না।
প্রশিক্ষণার্থীরা ওয়ারেন্ট এবং এর বিভিন্ন ধরনের প্রয়োগবিধি সম্পর্কে অবগত হন।
সংস্থাটি জানিয়েছে, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে বলা হয়। বিশেষ করে, গাড়িতে থাকা কাউকে আটকের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের করণীয় সম্পর্কেও বিস্তারিত জানানো হয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস