উত্তাল আইসল্যান্ড: আগুনের স্রোতে দিশেহারা, কি ঘটছে?

আইসল্যান্ডে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত, পর্যটক ও বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া।

উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের একটি দ্বীপরাষ্ট্র, আইসল্যান্ড। একে ‘বরফ ও আগুনের দেশ’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। দেশটির রাজধানী রেইকজাভিকের দক্ষিণে আবারও একটি আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত শুরু হয়েছে। এই কারণে সেখানকার পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) দেশটির আবহাওয়া অফিস এক বিবৃতিতে অগ্নুৎপাতের খবর নিশ্চিত করেছে।

ভূ-ত্বকের ফাটল দিয়ে নির্গত হওয়া লাভা প্রায় ১,২০০ মিটার (৩৯৩৭ ফুট) পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে এই অঞ্চলে বেশ কয়েকবার আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধরনের ফাটল-অগ্নুৎপাত কয়েক দশক বা শতাব্দী ধরে চলতে পারে।

এর আগে, ২০১১ সাল থেকে এই অঞ্চলে অগ্নুৎপাত বন্ধ ছিল।

অগ্নুৎপাতের কারণে নিকটবর্তী গ্রিন্ডাভিক শহরের কাছাকাছি সুরক্ষা ব্যারিয়ার ভেঙে গেছে। ফলে, সেখানকার বাসিন্দাদেরও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যদিও বেশিরভাগ বাড়িঘর এক বছরের বেশি সময় ধরে খালি পড়ে ছিল।

স্থানীয় সংবাদ সংস্থা থেকে জানা যায়, ব্লু লেগুন নামে পরিচিত একটি জনপ্রিয় স্পা-ও খালি করা হয়েছে। অগ্নুৎপাতের আশঙ্কার কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নর্ডিক ভলকানোলজিক্যাল সেন্টারের প্রধান রিকি পেডারসেন জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে ব্যারিয়ারের ভেতর দিয়ে লাভা প্রবাহিত হচ্ছে, তবে অগ্নুৎপাত এখনো সীমিত আকারে রয়েছে।” এর আগে, জানুয়ারিতেও এই অঞ্চলে একই ধরনের অগ্নুৎপাত হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অগ্নুৎপাতের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে রেইকজাভিকের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে, ২০০৮ সালের আইসল্যান্ডের Eyjafjallajökull আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে সৃষ্ট ছাইয়ের কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছিল।

এবার তেমন কোনো বিপর্যয় দেখা যায়নি।

প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক আইসল্যান্ডে আসেন, এখানকার মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখানকার সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, গেyser এবং উষ্ণ প্রস্রবণ দেখতে পছন্দ করেন।

এই অগ্নুৎপাতের কারণে পর্যটকদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের মতে, পরিস্থিতি এখনো পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *