জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (International Court of Justice – ICJ), সম্প্রতি সুদানের পক্ষ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (UAE) বিরুদ্ধে আনা একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে। সুদানের অভিযোগ ছিল, আমিরাত সুদানের গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহী প্যারা মিলিটারি বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (Rapid Support Forces – RSF) অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করে গণহত্যা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।
সোমবার (গতকালের মধ্যে), হেগ-ভিত্তিক আদালত জানায়, এই মামলার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার এখতিয়ার তাদের নেই এবং তাই মামলাটি খারিজ করা হলো।
১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও, আমিরাত এই চুক্তির সেই অংশ থেকে অব্যাহতি চেয়েছে, যা হেগ-ভিত্তিক আদালতকে এখতিয়ার দেয়। এর কারণ হিসেবে আমিরাত জানায়, তাদের এই বিষয়ে কোনো ভূমিকা নেই।
মার্চ মাসে, সুদান ICJ-এর কাছে কিছু অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছিল। এর মধ্যে ছিল আমিরাতকে দারফুরের মাসালিত সম্প্রদায়ের ওপর হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধ সংঘটন থেকে বিরত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা।
সংযুক্ত আরব আমিরাত এই মামলার তীব্র বিরোধিতা করে একে প্রচারণার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তারা আদালতের এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রিম কিতাইত এক বিবৃতিতে বলেন, “মামলাটি আইনগত এবং তথ্যগতভাবে ভিত্তিহীন। আমিরাত যুদ্ধে জড়িত নয় এবং এই মামলাটি সুদানি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের নিজস্ব দায়বদ্ধতা থেকে মনোযোগ সরানোর একটি প্রচেষ্টা।”
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে সুদানে মারাত্মক সংঘাত শুরু হয়। সুদানের সেনাবাহিনী এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা রাজধানী খার্তুমে বিস্ফোরিত হয় এবং পরে তা অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস এবং সুদানের সামরিক বাহিনী উভয়কেই নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত, যা সাতটি আমিরাত নিয়ে গঠিত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র, তাদের বিরুদ্ধে বারবার RSF-কে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। যদিও তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবে এর বিপরীত প্রমাণও রয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা