যুক্তরাষ্ট্রের আইডাহো অঙ্গরাজ্যে পুলিশের গুলিতে এক মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নিহত ভিক্টর পেরেজ (১৭) নামক ওই কিশোরের অটিজম এবং সেরিব্রাল পালসি’র মতো শারীরিক সমস্যা ছিল এবং সে কথা বলতে পারত না।
গত ৫ই এপ্রিল পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার তার মৃত্যু হয়।
পোক্যাটেলো শহরের পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন তারা একটি ফোন কলের ভিত্তিতে সেখানে যায়। খবর ছিল, ছুরি হাতে এক ব্যক্তি অন্য একজনকে তাড়া করছে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ সদস্যরা ভিক্টর পেরেজকে ছুরি হাতে দেখতে পান। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পরপরই কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই গুলি চালায়।
পেরেজের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ভিক্টর সম্ভবত মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। তারা জানান, ছুরিটি তার কাছ থেকে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা দ্রুতগতিতে এসে গুলি চালায়।
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের এমন আচরণ সম্পূর্ণ অমানবিক ছিল। ভিকটরের পরিবারের এক সদস্য জানান, “পুলিশ কোনো কথাই শোনেনি। তারা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা পর্যন্ত করেনি।”
এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা ফুঁসে উঠেছে। শনিবার সকালে হাসপাতালের সামনে এবং বিকেলে শহরের সিটি হলের বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভকারীরা “বিচার চাই” এবং “পুলিশের আরও ভালো কাজ করা উচিত” -এর মতো বিভিন্ন স্লোগান দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরের মেয়র ব্রায়ান ব্লাড এক বিবৃতিতে জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত দল এই ঘটনার তদন্ত করছে।
তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ভিক্টর পেরেজ পরিবারের কাছে ছিল ভালোবাসার এক আশ্রয়স্থল। পরিবারের সদস্যরা জানান, ভিক্টর কুস্তি দেখতে ভালোবাসত, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতে পছন্দ করত এবং মায়ের হাত ধরে হাঁটতে যেত।
পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রিয়জনের স্মৃতিচারণ করে এখনো শোকাহত।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে।