যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষার্থীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ব্রায়ান কোবার্গারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে, এই ঘটনার মূল কারণ আজও অজানা।
২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর, ইডাহো অঙ্গরাজ্যের একটি বাড়িতে কায়লি গনকালভেস, জেনা কারনোডেল, ম্যাডিসন মোগেন এবং ইথান চ্যাপিন নামের চার শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ব্রায়ান কোবার্গারকে সম্প্রতি আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয়।
আদালতে বিচার চলাকালীন সময়ে নিহতদের পরিবার এবং স্বজনদের মধ্যে তীব্র শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা বারবার জানতে চান, কেন এবং কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হলো? কিন্তু ব্রায়ান কোবার্গার, যিনি পেশায় অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন, তিনি এই বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।
বিচারক এবং তদন্তকারীরাও এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের আসল কারণ উদঘাটন করতে পারেননি।
এই ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের মতে, অপরাধীর কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছিল না। তারা জানান, এমন অনেক ঘটনা আছে যেখানে অপরাধীর আসল উদ্দেশ্য জানা যায় না। এমনকি, অপরাধী যদি তার কারণ জানায়ও, তবে তা হয়তো সবার কাছে বোধগম্য নাও হতে পারে।
নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এই রায়ের পর তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা ব্রায়ান কোবার্গারের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। অনেকে তাদের প্রিয়জনদের হারানোর কষ্ট প্রকাশ করে বলেছেন, কেন তাদের জীবন কেড়ে নেওয়া হলো।
অন্যদিকে, জেনা কারনোডেলের পরিবারের একজন সদস্য ব্রায়ান কোবার্গারকে ক্ষমা করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি আশা করেছিলেন, এর মাধ্যমে হয়তো ঘটনার কারণ জানা যেতে পারে। কিন্তু কোবার্গার নীরব থাকায় সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
আদালতের বিচারক স্টিভেন হিপলারও এই হত্যাকাণ্ডের কারণ জানতে না পারার হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, হয়তো কখনোই এই ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে না। বিচারক আরও যোগ করেন, “আমরা যদি বারবার ‘কেন’র উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি, তবে আমরা ব্রায়ান কোবার্গারকেই গুরুত্ব দিচ্ছি, যা তার উদ্দেশ্যকে আরও শক্তিশালী করবে।”
এই মামলার সরকারি কৌঁসুলি বিল থম্পসন জানান, তারা কোবার্গারের কাছ থেকে ঘটনার কোনো সত্য তথ্য পাওয়ার আশা করেননি। কারণ, তাদের ধারণা ছিল, কোবার্গার যা বলবেন, তা হয়তো তার নিজের স্বার্থের অনুকূলে হবে এবং তা নিহতদের পরিবারের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দেবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এই ঘটনার তদন্তকারীরাও হত্যাকাণ্ডের কারণ খুঁজে বের করতে অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ঘটনার কোনো সুস্পষ্ট কারণ তারা খুঁজে পাননি। তাদের মতে, অনেক সময় এমন ঘটনার আসল কারণ জানা সম্ভব হয় না।
এই ঘটনায় নিহতদের পরিবার এবং বন্ধুদের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে, যা হয়তো কোনোদিনই কাটবে না।
তথ্য সূত্র: সিএনএন