৬ বছরের শিশুকে হত্যা: ঘৃণাপূর্ণ অপরাধে বৃদ্ধের যাবজ্জীবন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে ৬ বছর বয়সী এক মুসলিম শিশুকে হত্যার দায়ে এক বাড়িওয়ালার ৫৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। অভিযুক্ত জোসেফ কজুবাকে গত শুক্রবার এই শাস্তি দেওয়া হয়। খবরটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে, গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর কয়েক দিন পরেই, কজুবা তার ভাড়াটিয়া, ৬ বছর বয়সী ওয়াডি আল-ফায়উমিকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। হামলায় ওয়াডির মা হানান শাহীন গুরুতর আহত হন। জানা যায়, কজুবা তাদের ইসলাম ধর্মাবলম্বী হওয়ার কারণে এবং গাজায় চলমান সংঘাতের জের ধরে এই ঘৃণ্য কাজটি করেন।

আদালতে পেশ করা নথিপত্র অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি-আমেরিকান পরিবারটি শিকাগো শহরতলীতে কজুবুর বাড়িতে ভাড়া থাকত। বিচার চলাকালীন সময়ে, ওয়াডির মা হানান শাহীন ঘটনার ভয়াবহতা বর্ণনা করেন। তিনি জানান, কজুবা প্রথমে তাকে আক্রমণ করেন এবং পরে তার ছেলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।

হামলাকারী তাদের মুসলিম হওয়ার কারণে বাড়ি ছাড়তে বলেছিলেন।

আদালতে শুনানিতে ওয়াডির পরিবারের সদস্যরা গভীর শোক প্রকাশ করেন। ওয়াডির চাচা মাহমুদ ইউসুফ বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের জন্য কোনো শাস্তিই যথেষ্ট নয়।” তিনি কজুবাকে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি এই ধরনের নৃশংসতা চালিয়েছেন। কিন্তু কজুবা কোনো জবাব দেননি।

মামলার শুনানিতে আহত হানান শাহীনের জবানবন্দী, ঘটনার বর্ণনা এবং পুলিশের দেওয়া ভিডিও ফুটেজ উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া, ঘটনাস্থলের ছবিগুলোও আদালতে দেখানো হয়। কজুবুর স্ত্রী মেরি, যিনি বর্তমানে তাকে তালাক দিয়েছেন, তিনি সাক্ষ্য দেন যে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ নিয়ে কজুবা বেশ উদ্বিগ্ন ছিলেন।

পুলিশ জানায়, কজুবা কোমর থেকে ছুরি বের করে ওয়াডিকে ২৬ বার আঘাত করেন, যার ফলে ঘটনাস্থলেই শিশুটির মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর স্থানীয় ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ঘটনার জেরে মুসলিম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করা হয়েছে এবং মার্কিন বিচার বিভাগ একটি ফেডারেল ঘৃণা-অপরাধ তদন্ত শুরু করেছে।

তথ্য সূত্র:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *