ইলিনয়ে চাঞ্চল্য: ডারবিনের আসনে লড়তে কৃষ্ণা‌মূর্তির ঘোষণা!

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে আসন্ন সিনেট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। ডিক ডারবিন-এর আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ডেমোক্রেট দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যেখানে রিপাবলিকান দলের প্রভাব বিস্তারের সম্ভবনাও রয়েছে।

এরই মধ্যে ডেমোক্রেট দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও কংগ্রেসম্যান রাজা কৃষ্ণমূর্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন, যা এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দৌড়কে আরও তীব্র করে তুলেছে।

কৃষ্ণমূর্তি, যিনি দীর্ঘদিন ধরে শিকাগোর উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করছেন, সংবাদ সংস্থা সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। ইলিনয়ে ২০১৬ সালের পর এই প্রথম ডেমোক্রেট দল থেকে সিনেটে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য এত বড় নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

এই নির্বাচনে কৃষ্ণমূর্তির সাথে আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন কংগ্রেসওম্যান রবিন কেলি এবং ইলিনয়ের লেফটেন্যান্ট গভর্নর জুলি আনা স্ট্র্যাটন।

এছাড়াও, ২০১৮ সালে একটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে জয়ী হওয়া কংগ্রেসওম্যান লরেন আন্ডারউডও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ভাবছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রাথমিক নির্বাচনটি সম্ভবত দেশের অন্যতম ব্যয়বহুল নির্বাচন হতে চলেছে। ডেমোক্রেট দল বর্তমানে ২০২৬ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে, যেখানে তাদের ঐক্যবদ্ধ একটি বার্তা খুঁজে বের করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।

যদিও এই আসনে ডেমোক্রেটদের জেতার সম্ভাবনা বেশি, তবে এই নির্বাচনের ফলাফল দলের ভবিষ্যৎ পথনির্দেশ করতে পারে।

কৃষ্ণমূর্তি মনে করেন, অতীতে ডেমোক্রেট দল ভোটারদের কাছে তাদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেনি। তিনি বলেন, “ডেমোক্রেটদের কখনোই বিদ্যমান অবস্থার পক্ষে থাকা উচিত নয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সিনেটে ডেমোক্রেট দলের নেতা হিসেবে চাক শুমারের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পেলে তিনি তার অগ্রাধিকারগুলো জানতে চাইবেন।

নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেওয়ার সময় কৃষ্ণমূর্তির হাতে প্রায় ১৯ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৯০ কোটি টাকা) নগদ ছিল। যেখানে রবিন কেলির কাছে ছিল ২ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ কোটি টাকা)।

অন্যদিকে, লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্ট্র্যাটনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন রাজ্যের বিলিয়নেয়ার গভর্নর জেবি প্রিটজকার। ডারবিন, যিনি ১৯৯৭ সাল থেকে সিনেটে এবং ২০০৫ সাল থেকে ডেমোক্রেট দলের হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি এখনো কোনো প্রার্থীকে সমর্থন জানাননি।

কৃষ্ণমূর্তি ডারবিনের সমর্থন পেতে আগ্রহী এবং গভর্নর প্রিটজকারের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল। তবে তিনি মনে করেন, ভোটারদের সমর্থন আদায় করতে প্রার্থীদেরই চেষ্টা করতে হবে।

এদিকে, লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্ট্র্যাটন মনে করেন, ইলিনয়ের এখন ওয়াশিংটনে নতুন কণ্ঠস্বর প্রয়োজন, যারা সমস্যা সমাধানে পারদর্শী এবং লড়াই করতে ভয় পায় না।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রসঙ্গে কৃষ্ণমূর্তি বলেন, তিনি এই কাজটি ভালোভাবে করতে প্রস্তুত। তিনি উল্লেখ করেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনি দুটি অভিশংসন বিলে ভোট দিয়েছেন এবং হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির সদস্য হিসেবে ট্রাম্পের বিদেশি সংযোগ নিয়ে তদন্ত করেছেন।

অন্যদিকে, রবিন কেলিও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং বন্দুক নিয়ন্ত্রণ ও মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *