আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইমেল্ডা’র কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে দেখা দিয়েছে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি আঘাত না হানলেও, এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র ঢেউ, স্রোতের টান এবং বন্যা দেখা দিয়েছে।
একইসঙ্গে, বারমুডা দ্বীপপুঞ্জের দিকে ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘হামবার্টো’। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বিরল ঘটনা হিসেবে এই সপ্তাহে দ্বীপটিতে পরপর দুটি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, ‘ইমেল্ডা’ বর্তমানে বাহামা দ্বীপপুঞ্জের উত্তর দিকে অবস্থান করছে এবং ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে মোড় নিচ্ছে।
এর প্রভাবে ফ্লোরিডা, ক্যারোলিনা এবং অন্যান্য উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। তীব্র স্রোতের টানে এরই মধ্যে ফ্লোরিডায় একজন এবং কিউবায় ভূমিধসে দুইজন নিহত হয়েছেন।
কিউবার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে একটি বাড়ি ধসে পড়লে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আবহাওয়াবিদরা আরো বলছেন, ‘ইমেল্ডা’র কারণে দক্ষিণ ক্যারোলিনার উপকূলীয় অঞ্চলে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে, তবে উত্তর ক্যারোলিনার কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, ফ্লোরিডার ‘স্পেস কোস্ট’ থেকে শুরু করে উত্তর ক্যারোলিনার ‘আউটার ব্যাংকস’ পর্যন্ত উপকূলীয় অঞ্চলে ১ থেকে ২ ফুট পর্যন্ত জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, ‘হামবার্টো’ নামক ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে বারমুডার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি একটি শক্তিশালী ক্যাটাগরি-৩ ঘূর্ণিঝড়, যা ঘণ্টায় প্রায় ১২০ মাইল বেগে বাতাস বইছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ‘হামবার্টো’র প্রভাবে বারমুডায় ভারী বৃষ্টিপাত ও শক্তিশালী বাতাস বইতে পারে। এর পরপরই ‘ইমেল্ডা’ আঘাত হানতে পারে, যা দ্বীপটির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি কোনো ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানেনি। তবে এর আগে ‘চানতাল’ নামের একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল, যা দক্ষিণ ক্যারোলিনায় ব্যাপক ক্ষতি করে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়ছে এবং এর ফলে ক্ষতির পরিমাণও বাড়ছে।
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জন্য ঘূর্ণিঝড় একটি পরিচিত দুর্যোগ। প্রতি বছরই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলো আমাদের দেশে আঘাত হানে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে।
তাই, এই ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি রাখা এবং সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন