আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সতর্ক করে জানিয়েছে যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি ‘গুরুতর ঝুঁকি’ তৈরি করতে পারে। এই উদ্বেগের কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির হিড়িককে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর উচিত হবে বিশ্ব বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও বাড়তে না দেওয়া।
শুক্রবার এশিয়ার বাজারগুলোতে এর নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। জাপানের নিক্কেই সূচক প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে এবং পুরো সপ্তাহের হিসাবে এই পতন ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
একই দিনে, টোকিওর টপিক্স সূচক ৪.৫ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ১.৩ শতাংশ কমেছে। লন্ডনের এফটিএসই১০০ সূচকও শুক্রবার সকালে ৪১ পয়েন্ট কমে যায়।
অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচকও ২.২ শতাংশ কমেছে, যা বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কার প্রতিফলন।
অপরিশোধিত ব্রেন্ট তেলের দামেও পতন দেখা গেছে। গতকালের তুলনায় আজ আরও ১.১ শতাংশ কমে ব্যারেল প্রতি দাম ৬৯.৪০ ডলারে নেমে এসেছে, যা গত তিন সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এর মূল কারণ হিসেবে চাহিদা কমার আশঙ্কাকে দায়ী করা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির কারণে ভারতীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোর শেয়ারেও বড় ধরনের পতন হয়েছে। শুক্রবার এনএসই নিফটি ফার্মা সূচক ৬ শতাংশের বেশি কমেছে, যা ২০২০ সালের মার্চ মাসের কোভিড মহামারীর পর থেকে সবচেয়ে বড় পতন।
উল্লেখ্য, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওষুধ রপ্তানির ৫৫ শতাংশের বেশি গ্রহণ করে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মুক্তি দিবস’ শুল্ক নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় প্রতিটি দেশের উপর ১০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন আর্থিক কেন্দ্রে শেয়ার বাজার থেকে ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ কমে গেছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতির উপর এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও এই ধরনের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা থেকে মুক্ত নয়।
বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান