শিরোনাম: কর্মজীবনের বাইরে: একজন ব্যস্ত কর্মীর আত্ম-অনুসন্ধান এবং অভিনয়ের মাধ্যমে মানসিক শান্তির সন্ধান
বর্তমান যুগে, কর্মজীবনের চাপ মানুষের জীবনে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করা, অফিসের চিন্তায় বিভোর থাকা—এসব যেন জীবনের স্বাভাবিক চিত্র।
কর্মজীবনের এই ব্যস্ততার মাঝে, নিজের জন্য একটু সময় বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। সম্প্রতি এমন এক বাস্তবতার গল্প জানা গেছে, যেখানে একজন পেশাদার নারী অভিনয়ের মাধ্যমে খুঁজে পেয়েছেন মানসিক শান্তির ঠিকানা।
এই নারীর কর্মজীবন ছিল অত্যন্ত ব্যস্ততাপূর্ণ। তিনি ছিলেন একটি পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত, যেখানে কাজের চাপ ছিল সীমাহীন। দিনরাত খবরের পেছনে ছুটতে গিয়ে একসময় তিনি অনুভব করলেন, যেন নিজের সত্তা হারিয়ে ফেলছেন।
তাঁর কাজই যেন তাঁর পুরো পরিচয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে, তিনি এক নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন—অভিনয়ের একটি প্রশিক্ষণ ক্লাসে যোগ দেন।
শুরুর দিকে, এই ক্লাসে যোগ দেওয়ার বিষয়টি তাঁর জন্য সহজ ছিল না। অভিনয়ের সাথে তাঁর কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না, তবে জনসম্মুখে কথা বলতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন।
ক্লাসে যোগ দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল কাজের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়া এবং কিছুক্ষণের জন্য হলেও নিজের জন্য সময় বের করা।
ক্লাসের প্রথম দিন, অন্য অনেকের মতোই তিনি কিছুটা নার্ভাস ছিলেন। তবে ক্লাসের পরিবেশ ছিল খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহযোগিতামূলক। এখানে সবাই একটি নিরাপদ স্থান তৈরি করতে চেয়েছিল, যেখানে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজেদের প্রকাশ করা যায়।
ক্লাসে, সদস্যরা তাঁদের নাম, নিজেদের প্রয়োজন এবং সীমাবদ্ধতাগুলো জানাতে পারতেন, যা একটি সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে।
এই ক্লাসে তিনি “হ্যাঁ, এবং” (yes, and) নামক একটি পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারেন। এই পদ্ধতির মূল ধারণা হলো, অন্য কারও কোনো কথায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে বরং তাদের ধারণাকে গ্রহণ করে, সেই অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়া।
এই পদ্ধতিটি পারস্পরিক সহযোগিতা ও সৃজনশীলতার একটি চমৎকার উদাহরণ।
অভিনয়ের মাধ্যমে, তিনি নতুন কিছু বিষয় আবিষ্কার করতে শুরু করেন। তিনি বুঝতে পারেন, নিজের ভেতরের সৃজনশীলতাকে জাগিয়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। কাজের চাপ থেকে দূরে, এই অভিনয়ের জগৎ তাঁকে নতুনভাবে বাঁচতে শিখিয়েছিল।
এই ক্লাসের মাধ্যমে তিনি শুধু মানসিক শান্তিই পাননি, বরং নতুন বন্ধুও তৈরি করেছেন।
দিনের শেষে, এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে, কর্মজীবনের বাইরেও মানুষের জীবনে অনেক কিছু রয়েছে। নিজের শখকে গুরুত্ব দেওয়া, নতুন কিছু শেখা এবং বন্ধু তৈরি করা—এগুলো মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সহায়ক।
জীবনের এই দিকগুলো একজন মানুষকে আরও পরিপূর্ণ করে তোলে। তাই, ব্যস্ত জীবনের মাঝেও, নিজের জন্য সময় বের করা এবং পছন্দের কাজগুলো করা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: পিপলস