আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবার, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে চলছে স্বজনদের শনাক্তের চেষ্টা।
ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয় এবং এতে অন্তত ২৯০ জন নিহত হয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে নিহতদের পরিবারগুলোতে।
শুক্রবার সকালে, নিহতদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন, যখন তাঁরা প্রিয়জনদের দেহের ডিএনএ নমুনা দিতে আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে ভিড় করেন। তাঁদের অনেকেরই প্রিয়জন ছিলেন বিমানের যাত্রী অথবা ক্রু সদস্য। অল্প সময়ের মধ্যে প্রিয়জনের এমন মর্মান্তিক পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা।
সান্তা গাউসোয়ামি নামের এক মা, যিনি তাঁর ১৯ বছর বয়সী ছেলেকে বিদায় জানিয়েছিলেন, ছেলের লন্ডনে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর পৃথিবী ওলট-পালট হয়ে যায়। তাঁর ছেলে, সাঙ্কেট, এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই-১৭২ এর ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ছিলেন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় বিমানের সবাই নিহত হয়েছেন, তবে একজন যাত্রী অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছেন।
এই দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন ২৬ বছর বয়সী মানিশা থাপা, যিনি বিমানের একজন কর্মী ছিলেন। তাঁর মা জানান, দুর্ঘটনার আগের দিন তিনি মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। মানিশার বাবা শুক্রবার সকালে ডিএনএ নমুনা দেওয়ার পর থেকে অবিরাম কেঁদে চলেছেন।
দুর্ঘটনার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং একমাত্র জীবিত ব্যক্তি ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাশ কুমার রমেশের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বিশ্বাশের বেঁচে যাওয়াকে একটি অলৌকিক ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। তিনি সামান্য আহত অবস্থায় অন্যদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড এবং যুক্তরাজ্যের এয়ার অ্যাক্সিডেন্টস ইনভেস্টিগেশন ব্রাঞ্চও এই তদন্তে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছে। ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে, যা দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করতে পারে।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করা হচ্ছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন