ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে তথ্যযুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
গত ৭ই মে তারিখে উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনেছে এবং হতাহতের সংখ্যা নিয়ে পরস্পরবিরোধী তথ্য প্রকাশ করেছে।
সংবাদ সংস্থা এগুলোর সূত্র অনুযায়ী, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাকিস্তানের অভ্যন্তরে জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে বলে দাবি করেছে।
তাদের দাবি, গত মাসে ভারত-শাসিত কাশ্মীরের একটি ঘটনায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
তবে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে এবং ভারতের কাছে তাদের দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ চেয়েছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ভারতীয় বাহিনী তাদের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে, যার ফলে তিনজন নিহত হয়েছে।
তাদের দাবি, হামলায় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তবে, ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, তাদের বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের কোনো ক্ষতি করেনি।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর একজন উইং কমান্ডার জানিয়েছেন, হামলাগুলো অত্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে চালানো হয়েছে এবং এতে কোনো ‘কোলেটারাল ড্যামেজ’ হয়নি।
উভয় পক্ষের দেওয়া তথ্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক দেখা যাচ্ছে।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র দাবি করেছেন, ভারতীয় পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে।
তবে, ভারতীয় পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনাগুলোর মাঝেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উভয় দেশ তাদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
উভয় দেশই তাদের বক্তব্যকে সমর্থন করার জন্য বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করছে, যার ফলে সত্য ঘটনা যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
অতীতেও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে, যেখানে উভয় পক্ষ পরস্পরবিরোধী দাবি করেছে।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ভারত দাবি করেছিল যে তারা পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তান এই দাবি অস্বীকার করে জানায়, হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
২০১৬ সালেও, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর ভারতীয় দাবিকে পাকিস্তান ‘ভ্রান্তি’ বলে অভিহিত করেছিল।
জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্ত এলাকায় প্রায়শই উত্তেজনা দেখা যায়, যা দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ককে আরও কঠিন করে তোলে।
উভয় দেশই কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে থাকে, যা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা