যুদ্ধ শুরু? কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা!

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা: দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বাড়ছে উদ্বেগে।

জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্ত অঞ্চলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার ফলে উভয়পক্ষেই হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে, উভয় দেশই যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মহল শান্তির বার্তা দিচ্ছে।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অভিযোগ আনা হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক ডেকেছেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইসলামাবাদ এর উপযুক্ত জবাব দেবে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ভারতীয় সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে এবং কয়েকটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।

অন্যদিকে, ভারত সরকার বলছে, তারা “সতর্কতামূলক ব্যবস্থা” হিসেবে এই হামলা চালিয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি জানান, তাদের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, ভারতের বিরুদ্ধে আরও হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।

তাই সম্ভাব্য বিপদ থেকে বাঁচতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা “সন্ত্রাসী ঘাঁটি” এবং অস্ত্র ভাণ্ডারগুলিতে আঘাত হেনেছে।

জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (লাইন অফ কন্ট্রোল) বরাবর উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন।

পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণাধীন কাশ্মীর অঞ্চলের রাজধানী মুজাফ্ফরাবাদে ভারতীয় বিমান হামলার কারণে সেখানকার বাসিন্দারা পাহাড়ের দিকে পালাতে শুরু করে।

উভয় দেশের মধ্যে এই সংঘর্ষে সাধারণ মানুষের হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

পাকিস্তানের সামরিক সূত্র জানাচ্ছে, ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাঞ্জাবের বাহাওয়ালপুরে একটি মসজিদে আঘাত হানে, যাতে একজন শিশু নিহত এবং আরও দুইজন আহত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দুই দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনাকে “দুঃখজনক” উল্লেখ করে দ্রুত পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার প্রত্যাশা করেছেন।

চীনের পক্ষ থেকেও উভয় দেশের প্রতি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

যুক্তরাজ্যও এই সংকট নিরসনে ভারত ও পাকিস্তানকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।

পাকিস্তানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার ভারতের বিরুদ্ধে “উস্কানিমূলক” আচরণের অভিযোগ করেছেন এবং কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়ার জন্য নয়াদিল্লির সমালোচনা করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মুহূর্তে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা কমানো জরুরি।

উভয় দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে, যাতে এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *