যুদ্ধ আসন্ন! ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চরম উত্তেজনা, বাড়ছে উদ্বেগে!

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা: যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দুই দেশ

পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতীয় সামরিক অভিযান এবং এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের পাল্টা পদক্ষেপের কারণে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধংদেহী মনোভাব দেখাচ্ছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

বুধবার (তারিখ উল্লেখ করা হয়নি, তবে বুধবারের ঘটনা বলা হয়েছে) ভারতীয় সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা চালায়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘সিন্দুর’।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের দাবি, তারা ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং একটি ড্রোন ধ্বংস করেছে। তবে, ভারত সরকার এখনো পর্যন্ত তাদের কোনো বিমান হারানোর কথা স্বীকার করেনি।

জানা গেছে, ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি স্থানে হামলা চালিয়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, তারা সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে এই অভিযান চালিয়েছে।

তাদের দাবি, এতে কোনো বেসামরিক নাগরিক বা সামরিক স্থাপনার ক্ষতি হয়নি। তবে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতীয় হামলায় বেসামরিক লোক হতাহত হয়েছে এবং কিছু মসজিদেও ক্ষতি হয়েছে।

এই দাবির সত্যতা যাচাই করা এখনো সম্ভব হয়নি।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতের এই পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এর উপযুক্ত জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

উভয় দেশের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রেখা (লাইন অফ কন্ট্রোল) বরাবর গোলাগুলি ও সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গেছে।

এই সংঘাতের সূত্রপাত হয় কাশ্মীরে ভারতীয় পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনার পর।

এপ্রিল মাসে কাশ্মীরের একটি মনোরম স্থানে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন ভারতীয় পর্যটক।

ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবে এর জের ধরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস পায়।

উভয় পক্ষের হতাহতের সংখ্যা নিয়েও পরস্পরবিরোধী তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানাচ্ছে, ভারতীয় হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৪৬ জন।

নিহতদের মধ্যে শিশু ও কিশোরও রয়েছে।

অন্যদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাবর্ষণে কাশ্মীরে সাতজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

পরিস্থিতি বিবেচনা করে, কাশ্মীর অঞ্চলে বসবাসকারী সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সেখানকার কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছে।

এই ঘটনার জেরে পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যার ফলে অনেক আন্তর্জাতিক বিমানের ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হচ্ছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদ রয়েছে।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকেই এই অঞ্চলটি উভয় দেশের মধ্যে একটি প্রধান বিরোধপূর্ণ বিষয়।

অতীতেও কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং উভয় দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘাত এড়াতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপানসহ বিভিন্ন দেশও উত্তেজনা কমাতে উভয় পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *