যুদ্ধোন্মুখ দুই প্রতিবেশী: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কি চরম পরিণতি?

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সম্ভবনা: কাশ্মীর সংঘাতের জেরে উত্তেজনা চরমে।

ইসলামাবাদ, পাকিস্তান – কাশ্মীর অঞ্চলে পর্যটকদের উপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক ফের একবার চরম অবনতির দিকে। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।

দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার অভিযোগ এনেছে।

গত ২২শে এপ্রিল, কাশ্মীরের পাহালগামে একদল বন্দুকধারী অন্তত ২৬ জন পর্যটকে গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনায় আরও ১৭ জন আহত হয়েছে।

ভারত সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তান সমর্থিত ‘কাশ্মীর প্রতিরোধ’ নামক একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে। ঘটনার পরেই ভারত সরকার কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করে, সীমান্ত বন্ধ করে দেয় এবং দুই দেশের মধ্যে জলবন্টন চুক্তি স্থগিত করে দেয়।

এরপর, পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা হিসেবে পাকিস্তানও ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় এবং তাদের আকাশপথ ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য বন্ধ করে দেয়।

দুই দেশের মন্ত্রীরা এমন ইঙ্গিত দেন যে পরিস্থিতি সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে মোড় নেয় যখন উভয় দেশই সীমান্ত রেখা বরাবর গোলাগুলি বিনিময় শুরু করে।

পাকিস্তান আশঙ্কা প্রকাশ করে যে, নিয়ন্ত্রণ রেখা চুক্তিও তারা বাতিল করতে পারে।

জাতিসংঘ উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ভারত যদি পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

ইরান মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু কোনো ফল হয়নি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু করার জন্য সাহায্য করতে চাইছে।

উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে, পাকিস্তান ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং ভারতও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে, যা উভয় দেশেই ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়েছে।

ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলার দাবি করেছে, যদিও পাকিস্তান একে যুদ্ধের শামিল বলে অভিহিত করেছে।

এই পরিস্থিতিতে, উভয় দেশই তাদের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছে এবং স্কুলসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে সামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগ এনেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কাশ্মীর, জম্মু এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে জি-৭ দেশগুলো, উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে তা শুধু আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যই হুমকি নয়, বরং এর ফল হবে সুদূরপ্রসারী।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *