যুদ্ধজয়ে ভারতীয় সেনাদের বড় সাফল্য, নিহত ৩১ মাওবাদী

ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী সম্প্রতি ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানা রাজ্যের সীমান্তবর্তী কারেগুত্তালু পাহাড়ে এক বড় ধরনের অভিযানে ৩১ জন মাওবাদী বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে। ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অভিযানকে নকশালবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

বুধবার এক সামাজিক মাধ্যমে অমিত শাহ লেখেন, “যে পাহাড়ে একসময় লাল आतंकের রাজত্ব ছিল, সেখানে আজ গর্বের সঙ্গে তেরঙ্গা উড়ছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী মাত্র ২১ দিনের মধ্যে এই বিরাট নকশাল বিরোধী অভিযান সম্পন্ন করেছে এবং আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এই অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো সদস্য হতাহত হননি।”

১৯৬৭ সাল থেকে ভারতে নকশাল বিদ্রোহ শুরু হয়, যা মূলত মাওবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত একটি বামপন্থী আন্দোলন। এই বিদ্রোহীরা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার কথা বলে আসছে।

একসময় তাদের শক্ত অবস্থান ছিল এবং দেশের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত তাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল। তবে বর্তমানে তাদের প্রভাব কমে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিরাপত্তা বাহিনীর এই সাফল্যের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনীর এই সাফল্য প্রমাণ করে নকশালবাদ নির্মূলের লক্ষ্যে আমাদের অভিযান সঠিক পথে চলছে।

আমরা নকশাল প্রভাবিত এলাকাগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সেগুলোকে উন্নয়নের মূল স্রোতের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের মহাপরিচালক (ডিজি) জি.পি. সিং বুধবার জানান, সরকার ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে “অবিরাম এবং কঠোর অভিযানের” মাধ্যমে নকশালবাদ নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর থেকে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত ৪০০ জন নকশাল বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে। সম্প্রতি, ছত্তিশগড় ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে ভারতীয় বাহিনী ১১ জন বিদ্রোহী নিহত করে।

ফেব্রুয়ারিতে নিরাপত্তা বাহিনী ১১ জন এবং মার্চ মাসে আরও ৩০ জন বিদ্রোহী যোদ্ধাকে হত্যা করে। এছাড়াও, পররাষ্ট্র অফিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৭১৮ জন নকশাল আত্মসমর্পণ করেছে।

এই ঘটনার মাধ্যমে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী নকশাল দমনের ক্ষেত্রে তাদের দৃঢ়তা আরও একবার প্রমাণ করল। তবে, বিদ্রোহীদের নির্মূল করা এবং ওই অঞ্চলের শান্তি ফিরিয়ে আনা এখনও একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *