ইনাকি উইলিয়ামস: এথলেটিক বিলবাওয়ের ‘ধর্ম’-এর প্রতিচ্ছবি
ফুটবল যেন শুধু একটা খেলা নয়, বরং এক ধরণের আবেগ। আর সেই আবেগ যখন জন্মভূমি, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের সাথে মিশে যায়, তখন তা এক ভিন্ন রূপ নেয়।
স্প্যানিশ ক্লাব এথলেটিক বিলবাওয়ের স্ট্রাইকার ইনাকি উইলিয়ামসের কথা শুনলে তেমনটাই মনে হয়।
বাস্কে অঞ্চলের এই ক্লাবটির খেলোয়াড়েরা শুধু ফুটবলার নয়, তারা যেন এক একটি জীবন্ত কিংবদন্তি।
সম্প্রতি কোপা দেল রে জয় করে তারা আবারও প্রমাণ করেছে তাদের দৃঢ়তা।
উইলিয়ামস, যিনি মাঠে দ্রুতগতির জন্য পরিচিত, সেই জয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, “যেন এক উন্মাদনা! চোখে জল চলে এসেছিল, যখন গাবারার (নদীর উপর দিয়ে ট্রফি নিয়ে যাওয়ার ঐতিহ্যবাহী নৌকো) কথা শুনছিলাম।
৪০ বছর পর আবার কাপ হাতে নেওয়া, যেন এক স্বপ্ন।”
এথলেটিক বিলবাওয়ের খেলোয়াড়েরা তাদের খেলোয়াড় বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও বেশ আলাদা।
ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী, বাস্কে অঞ্চলে জন্ম অথবা বেড়ে ওঠা ফুটবলাররাই কেবল এখানে খেলার সুযোগ পান।
এই নীতি ক্লাবের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
উইলিয়ামস বলেন, “আধুনিক ফুটবলে যখন অনেক অর্থ আসে, ক্লাবগুলো বাইরের খেলোয়াড় কেনে, তখন আমাদের এই সীমাবদ্ধতা থাকে।
কিন্তু ১১ বছর বয়স থেকে যাদের সঙ্গে খেলছি, যাদের সঙ্গে একই স্বপ্ন দেখেছি, তাদের নিয়ে খেলাটা অন্যরকম।”
উইলিয়ামস শুধু একজন ফুটবলার নন, তিনি এই ক্লাবের কাছে এক অনুভূতির নাম।
তিনি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড় যিনি এথলেটিকের হয়ে গোল করেছেন।
বাস্কে অঞ্চলে বেড়ে ওঠা, ঘানার হয়ে খেলা, সব মিলিয়ে তিনি এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
কঠিন সময়েও কিভাবে মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়, তা তিনি শিখেছেন।
উইলিয়ামস জানান, “আগে আমি অনেক সুযোগ পেলেও গোল করতে পারতাম না।
তবে সময়ের সাথে সাথে আমি নিজেকে তৈরি করেছি।
এখন আমি ভুলগুলো সহজে সামলাতে পারি।”
তাঁর কোচ মার্সেলিনোর কথা আজও মনে রেখেছেন উইলিয়ামস।
তিনি বলেন, “মার্সেলিনো আমাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘প্রতি তিনটার মধ্যে একটা সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে হবে।
বাকি দুটো মিস করলেও সমস্যা নেই।’”
উইলিয়ামসের ভাষায়, এথলেটিক বিলবাও যেন একটা ‘ধর্ম’।
সমর্থকেরা সবসময় তাদের পাশে থাকে, কঠিন সময়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার স্বপ্ন নিয়ে, ইউরোপিয়ান ফাইনালের দিকে তাকিয়ে থাকা এই ক্লাবটির খেলোয়াড়েরা তাদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান