নতুন মা হওয়ার পর নিজের শরীর নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছেন? পরিত্রাণের উপায় বাতলে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ
মা হওয়ার পর একজন নারীর জীবনে আসে নতুন উপলব্ধি, আসে আনন্দ। কিন্তু অনেক সময় এই সময়ে কিছু মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়। বিশেষ করে নিজের শরীর নিয়ে অনেক নারী হীনমন্যতায় ভোগেন।
সম্প্রতি, এমন এক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন এক নারী, যিনি মা হওয়ার পর নিজের শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে তীব্র আত্ম-সমালোচনা অনুভব করছেন। তিনি জানান, আয়নায় নিজের প্রতিচ্ছবি দেখতেও তার কষ্ট হয়।
নিজেকে তিনি ‘অসুন্দর’ এবং ‘অযোগ্য’ মনে করেন। সবসময় তার মনে হয়, তার সঙ্গী হয়তো তাকে ছেড়ে চলে যাবে।
এই মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তিনি একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ চেয়েছেন। বিশেষজ্ঞ ফিলিপা তার উদ্বেগের কারণগুলো বুঝতে পারেন এবং কিছু কার্যকরী পরামর্শ দিয়েছেন।
ফিলিপা মনে করেন, এই ধরনের আত্ম-সমালোচনা একটি সাধারণ মানবীয় দুর্বলতা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তিনি কিছু কৌশল অবলম্বন করতে বলেছেন:
- নিজের ভেতরের সমালোচকের সঙ্গে পরিচিত হন: ফিলিপা পরামর্শ দেন, নিজের ভেতরের সমালোচককে একটি মজার নাম দিন। এটিকে একটি আলাদা সত্তা হিসেবে কল্পনা করুন। যখন সেই সমালোচক কথা বলবে, তখন তাকে উপেক্ষা করতে শিখুন। তার কথায় গুরুত্ব না দিয়ে নিজের মনোযোগ অন্য দিকে সরিয়ে নিন।
- নিজের প্রতি সহানুভূতিশীল হন: নিজের প্রতি কঠোর না হয়ে সহানুভূতিশীল হতে চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, আপনি একা নন। সবার জীবনেই এমন সময় আসে, যখন তারা নিজেদের নিয়ে হতাশ হয়। নিজের দুর্বলতাগুলো মেনে নিয়ে নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন।
- অন্যদের সঙ্গে কথা বলুন: আপনার কষ্টগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। কাছের বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা বিশ্বস্ত কারও সাথে কথা বললে মানসিক চাপ কমে।
- অন্যান্য কাজে মনোযোগ দিন: যখন খারাপ চিন্তা আসে, তখন অন্য কিছু করার চেষ্টা করুন। যেমন – বই পড়া, গান শোনা অথবা পছন্দের কোনো কাজ করা।
ফিলিপা আরও বলেছেন, আমাদের সমাজে নারীদের শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে অনেক চাপ থাকে। মিডিয়া এবং সমাজের বিভিন্ন দিক থেকে আসা এই চাপ অনেক সময় মানসিক স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।
তাই, নিজের শরীরের গঠন নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা না করে, ভেতরের সৌন্দর্য এবং আত্ম-বিশ্বাসের উপর জোর দেওয়া উচিত।
যদি আপনিও এই ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে হতাশ না হয়ে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, আপনি একা নন এবং এই সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ অবশ্যই আছে। নিজের প্রতি যত্ন নিন এবং আত্ম-সমালোচনা থেকে বেরিয়ে এসে নিজের প্রতি সদয় হোন।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান