বৈশ্বিক বাজারে আইফোন-এর দামে পরিবর্তন আসার সম্ভবনা, বাংলাদেশের বাজারে এর প্রভাব কতটুকু?
বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তি পণ্যের চাহিদা বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে স্মার্টফোন-এর বাজার। বিশেষ করে, অ্যাপল-এর আইফোন-এর চাহিদা সবসময়ই চোখে পড়ার মতো। কিন্তু সম্প্রতি এমন কিছু খবর পাওয়া যাচ্ছে যা আইফোন-এর দামের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
মূলত, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর ফলে আইফোন-এর মত প্রযুক্তি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কারণ, অ্যাপল-এর সরবরাহ শৃঙ্খলের একটি বড় অংশ চীনের উপর নির্ভরশীল।
ফলে, শুল্কের কারণে চীন থেকে আসা যন্ত্রাংশ এবং অন্যান্য উপাদানের দাম বাড়বে, যা আইফোন-এর উৎপাদন খরচকে প্রভাবিত করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক বহাল থাকলে আইফোন-এর দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে। যদিও এই দাম কত বাড়বে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
তবে, কিছু বিশ্লেষক-এর ধারণা অনুযায়ী, একটি আইফোন-এর মডেলের দাম ৬৭৫ মার্কিন ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮০ হাজার টাকার বেশি।
বর্তমানে অ্যাপল-এর আইফোন তৈরির প্রায় ৯০ শতাংশ চীন-এ হয়ে থাকে। তাই, এই শুল্কের প্রভাব সরাসরি তাদের উপর পড়ছে।
যদিও অ্যাপল ধীরে ধীরে তাদের উৎপাদন ব্যবস্থা চীন থেকে সরিয়ে ভারত এবং ভিয়েতনামের মত দেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তবে এতেও খরচ বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য কোনো দেশে আইফোন তৈরি করতে গেলেও যন্ত্রাংশ এবং অন্যান্য উপকরণের জন্য চীন-এর উপর নির্ভর করতে হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আইফোন-এর সরবরাহ কমে গেলে বা দাম বাড়লে, তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে। কারণ, বাংলাদেশের বাজারে আইফোন-এর দাম আন্তর্জাতিক বাজারের দামের সাথে সম্পর্কিত।
যদি আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ে, তাহলে স্থানীয় বাজারেও তার প্রভাব পড়বে।
বাংলাদেশে আইফোন-এর চাহিদা সবসময়ই থাকে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা অনেক। যদিও বাংলাদেশে আইফোন-এর আনুষ্ঠানিক পরিবেশক রয়েছে, তবে অনেক গ্রাহক বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক বাজার থেকেও ফোন কেনেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে, এই দুটি বাজারেই তার প্রভাব দেখা যেতে পারে। দাম বাড়ার কারণে অনেক ক্রেতা পুরোনো মডেলের দিকে ঝুঁকতে পারেন, অথবা নতুন ফোন কেনার পরিকল্পনা স্থগিত করতে পারেন।
বর্তমানে, বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর-এর মাধ্যমে কিস্তিতে ফোন কেনার সুযোগ রয়েছে। দাম বাড়লে, এই ধরনের অফার-এর চাহিদা আরও বাড়তে পারে, যা গ্রাহকদের জন্য কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে।
এ ব্যাপারে প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অ্যাপল-কে হয়তো তাদের উৎপাদন পরিকল্পনা এবং পণ্যের দামের বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হতে পারে। তবে, এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
সুতরাং, আইফোন-এর দাম বৃদ্ধির এই সম্ভাবনা বাংলাদেশের প্রযুক্তি বাজারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে, ভোক্তাদের সচেতন থাকতে হবে এবং বাজারের গতিবিধির উপর নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন