ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটির মধ্যে আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। একইসাথে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার হুমকিকে তারা পরোয়া করে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
শনিবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, আলোচনা চলছে এবং তা চলবে। যুদ্ধের কোনো ইচ্ছা তাদের নেই, তবে কোনো হুমকির কাছে নতি স্বীকারও করবে না তেহরান।
তিনি আরও বলেন, আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু কোনো হুমকি দিয়ে ইরানকে তাদের অধিকার থেকে সরানো যাবে না। সামরিক, বৈজ্ঞানিক, এবং পারমাণবিক ক্ষেত্রে অর্জিত সম্মানজনক অবস্থান তারা সহজে ছাড়বে না।
বর্তমানে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে সম্ভাব্য একটি চুক্তির খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে মূল যে বিষয়টি নিয়ে জটিলতা রয়েছে, তা হলো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ।
ইরান চায় তাদের এই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে দিতে হবে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরানকে এটা বন্ধ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যে, কোনো চুক্তি না হলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালানো হতে পারে। ইরানের কর্মকর্তারাও সতর্ক করে বলেছেন, তাদের কাছে বর্তমানে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুত আছে, তা দিয়ে তারা খুব সহজেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে।
গত শুক্রবার ট্রাম্প জানান, আলোচনার সময় ইরান একটি প্রস্তাব পেয়েছে, তবে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
মধ্যপ্রাচ্যে এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে ইসরায়েলও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার হুমকি দিয়েছে। গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এরই মধ্যে বেশ জটিল হয়ে উঠেছে।
এদিকে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির শান্তিপূর্ণ দিকটির ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা তাদের কার্যক্রমের ওপর “নিরন্তর” নজর রাখছে।
ইসলামি আরও জানান, ২০২৩ সালে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল প্রায় ৪৫০ বারের বেশি পরিদর্শন করেছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস