ইরানে ঐতিহ্যবাহী অগ্নি উৎসব, নওরোজের আগে উদযাপন। ইরানে আসন্ন পারস্য নববর্ষের প্রাক্কালে, দেশটির মানুষজন তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী অগ্নি উৎসব ‘চারشنبه সুরি’ উদযাপন করে।
এটি একটি আনন্দময় উৎসব, যা বসন্তের আগমন এবং নওরোজের (নওরোজ) সূচনাকে চিহ্নিত করে। এই উৎসবে মেতে ওঠে পুরো ইরান, যেখানে পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে নতুন করে জীবন শুরুর প্রত্যাশা করা হয়।
‘চারشنبه সুরি’ উৎসবটি ফার্সি ভাষায় ‘বুধবারের উৎসব’ নামেও পরিচিত। উৎসবটি সাধারণত পারস্য নববর্ষের আগের বুধবারের সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়।
এই দিনে, ইরানের মানুষজন একসঙ্গে মিলিত হয়ে বিশাল অগ্নিকুণ্ড তৈরি করে এবং তার চারপাশে নাচ-গান করে। তারা আতশবাজি ফোটায় ও আকাশে শুভেচ্ছা বাতি (wish lantern) ওড়ায়।
অনেকে আগুনের ওপর দিয়ে লাফিয়ে ওঠে এবং এই সময় “আমার হলুদ তোমার, তোমার লাল আমার” এই মন্ত্র উচ্চারণ করে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের অসুস্থতা ও দুর্বলতা দূর করে উষ্ণতা ও শক্তির আগমন কামনা করে।
এই উৎসবের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ‘নটস ও বেরি’ বিতরণ করা। এই দিনে, শিশুরা বাড়ি বাড়ি যায় এবং উৎসবের মিশ্রণ হিসেবে বাদাম ও ফল পায়।
এটি অনেকটা আমাদের দেশের ঈদ বা পূজার উৎসবের মতো, যেখানে সবাই মিলেমিশে আনন্দ করে।
আর্টের ভাষায় বলতে গেলে, এই উৎসব যেন এক জীবন্ত ক্যানভাস। উৎসবের আলোকসজ্জা, মানুষের উচ্ছ্বাস, আতশবাজির ঝলকানি – সব মিলিয়ে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়।
তবে, উৎসবের আনন্দে মাঝে মাঝে কিছু দুর্ঘটনাও ঘটে। আতশবাজির কারণে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে, এমনকি মৃত্যুর খবরও শোনা যায়।
এই উৎসব ইরানি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। যুগ যুগ ধরে এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে এবং এটি তাদের জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
‘চারشنبه সুরি’ কেবল একটি উৎসব নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, যা ইরানিদের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)