ইরানে ইসরায়েলের গুপ্তচর সন্দেহে ফাঁসি: স্তম্ভিত বিশ্ব!

ইরানে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে একজনকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে। সোমবার দেশটির সরকার এই রায় কার্যকর করে। বাহমান চুবিয়াসল নামের ওই ব্যক্তিকে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে কাজ করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

তেহরান সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে, তাকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যা বলছে।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র মিজান নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, চুবিয়াসল ‘সংবেদনশীল টেলিযোগাযোগ প্রকল্প’-এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস আমদানির পথ সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করতেন।

তবে চুবিয়াসলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এবং তার বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

এই মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির কারণে দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়েছে।

এর আগে, ইরান সরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এই পরিস্থিতিতে অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে, এই ধরণের মৃত্যুদণ্ড কি আসলে আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবিলা এবং অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভ দমনের একটি কৌশল?

গত জুনে ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের মধ্যে হওয়া এক সামরিক সংঘাতে প্রায় ১,১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়।

এই ঘটনার পর থেকে ইরান গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অন্তত ৯ জন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বাবাক শাহবাজি নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতনের মাধ্যমে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল।

শাহবাজি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে একটি চিঠি লিখে কিয়েভের পক্ষে যুদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

গত কয়েক বছরে, ইরানের অর্থনীতি, নারীদের অধিকার এবং দেশটির সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবিতে দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ হয়েছে।

এই প্রতিবাদ এবং ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে, ১৯৮৮ সালের পর থেকে, যখন ইরান-ইরাক যুদ্ধের সমাপ্তিতে হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, সেই সময়ের কাছাকাছি গতিতে এখন আবার বন্দীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে।

নরওয়ের মানবাধিকার সংস্থা ‘ইরান হিউম্যান রাইটস’ এবং ওয়াশিংটনভিত্তিক ‘আব্দুর রহমান বোরুমন্দ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরান’-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ইরানে ১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ ইরান সরকার তাদের মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে না।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *