ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে তেহরান। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
সম্প্রতি, মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শুক্রবার (আজ) ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে গভীর মতবিরোধ রয়েছে।
ওয়াশিংটন বলছে, এর ফলে তেহরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দিকে ঝুঁকতে পারে। যদিও ইরান বরাবরই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ বলে দাবি করে আসছে।
তারা জানিয়েছে, এর উদ্দেশ্য হলো বেসামরিক কাজে ব্যবহার করা।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এক চিঠিতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে সতর্ক করে বলেন, “ইরান ইসরায়েলের কোনো দুঃসাহসিক পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করবে এবং এই শাসনের যেকোনো হুমকি বা বেআইনি কাজের দৃঢ় জবাব দেবে।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের হুমকি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
আরাকচি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে, আমরা আমাদের পারমাণবিক স্থাপনা ও উপকরণ রক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।
মঙ্গলবার সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমন কিছু গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে, যা থেকে বোঝা যায় ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যদিও ইসরায়েল এখনো পর্যন্ত এমন কোনো প্রস্তুতির কথা স্বীকার করেনি।
তবে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরায়েলের শীর্ষ কর্মকর্তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার হুমকি দিয়ে আসছেন।
তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো, ইরান যাতে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করা।
এদিকে, ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তারা যদি কোনো হামলা চালায়, তবে তার “ধ্বংসাত্মক ও চূড়ান্ত জবাব” দেওয়া হবে।
আইআরজিসি’র মুখপাত্র আলীমোহাম্মদ নাইনি বলেন, “তারা (ইসরায়েল) আমাদের যুদ্ধের ভয় দেখাচ্ছে, কিন্তু তারা ভুল হিসাব করছে।
কারণ, তারা জানে না যুদ্ধের পরিস্থিতিতে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের কতটা শক্তিশালী জনসমর্থন ও সামরিক শক্তি রয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিও মঙ্গলবার এক বক্তব্যে বলেন, তেহরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দাবি “অত্যধিক ও আপত্তিকর”।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এই আলোচনা এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা