শিরোনাম: ইসরায়েলের আক্রমণে বিপর্যস্ত ইরান: তেহরানের পাল্টা পদক্ষেপের ক্ষমতা কতটুকু?
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে ইসরায়েল সম্প্রতি ইরানের ওপর ব্যাপক সামরিক হামলা চালিয়েছে। শুক্রবারের (তারিখ উল্লেখ নেই) এই হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়, যার ফলে তেহরানের পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষমতা কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সামরিক ঘাঁটি এবং নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানে।
এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল ইরানের সামরিক সক্ষমতাকে দুর্বল করা এবং দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচিকে ব্যাহত করা। হামলায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাদের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে বড় ধরনের ধাক্কা দিতে পারে। তবে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার একটি বড় কারণ হলো ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির উচ্চাকাঙ্ক্ষা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, ঠিক তখনই ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করেছে।
ইসরায়েল মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের কোনো চুক্তি হলে তা তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই, তারা একতরফাভাবে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
ইরানের পক্ষে এখন তাৎক্ষণিক ও জোরালো প্রতিক্রিয়া জানানো কঠিন। কারণ, ইসরায়েলের হামলায় তাদের সামরিক শক্তি এরই মধ্যে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাছাড়া, হিজবুল্লাহর মতো গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদেরও তারা হারাতে বসেছে।
ইরানের সামরিক সক্ষমতার ওপর ইসরায়েলের এই আঘাত দেশটির প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষমতাকে সীমিত করে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইরান হয়তো কৌশলগতভাবে দুর্বল আঘাত হানতে পারে, অথবা পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা আরও দ্রুত করতে পারে। তবে, সেক্ষেত্রেও তাদের ঝুঁকি অনেক।
অন্যদিকে, এই ঘটনার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক প্রভাব কমে যেতে পারে। কারণ, ইসরায়েল এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পায়নি বলেই মনে হচ্ছে।
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য একাই লড়তে প্রস্তুত।
ইসরায়েলের এই হামলা শুধু সামরিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটেও গভীর প্রভাব ফেলেছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগের মধ্যে ইসরায়েলের এই আগ্রাসী পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এখন সবার দৃষ্টি ইরানের প্রতিক্রিয়ার দিকে, যা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে নতুন মোড় দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন