মার্কিন দাবিকে ‘অর্থহীন’ বললেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা!

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে চলমান আলোচনা কার্যত ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উত্থাপিত কিছু দাবিকে ‘অর্থহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন।

ওমানের মধ্যস্থতায় হওয়া এই আলোচনাগুলোতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করবে এবং এর বিনিময়ে দেশটির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। তবে, দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ এখনো বিদ্যমান।

বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ইরান যেন কোনো অবস্থাতেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম পরিচালনা না করে। কিন্তু ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা তাদের অভ্যন্তরীণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবে, যা তাদের কাছে কোনো আপোসযোগ্য বিষয় নয়।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে বিশ্ব শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেরিয়ে আসেন। এরপর থেকেই এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ছে।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর নতুন করে চুক্তি করার চেষ্টা করছেন, তবে ইরানের কঠোর অবস্থানের কারণে সেই আলোচনা এখনো পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেনি।

ইরান বর্তমানে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। যদিও ২০১৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী, এই হার ছিল ৩.৬৭ শতাংশ।

তবে, বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধকরণের থেকে এটি এখনো অনেক নিচে। ইরানের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে এবং তারা কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চায় না।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন আলোচক স্টিভ উইটকফ এই কর্মসূচিকে ‘রেড লাইন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো অবস্থাতেই ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ১ শতাংশেরও বেশি ক্ষমতা রাখতে দেবে না।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি অবশ্য বলেছেন, একটি চুক্তির মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি রোধ করা এখনো সম্ভব।

তবে তিনি এ কথাও যোগ করেছেন যে, চুক্তি হোক বা না হোক, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাবে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই আলোচনা ব্যর্থ হলে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা আরও বাড়বে, যা বিশ্ব অর্থনীতি এবং জ্বালানি বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *