ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে আবার আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগামী শনিবার ইতালির রাজধানী রোমে দু’পক্ষের মধ্যে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি বাস্তবসম্মত প্রস্তাব দেয়, তাহলে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব। খবর অনুযায়ী, ওমানের মধ্যস্থতায় এই আলোচনা হতে চলেছে, যেখানে দুই দেশের প্রতিনিধিরা পরোক্ষভাবে কথা বলবেন।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস আরাকচি সম্প্রতি মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, যদি যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় আন্তরিক হয় এবং অবাস্তব কোনো দাবি না জানায়, তাহলে একটি চুক্তিতে আসা যেতে পারে। এর আগে, ওমানে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়, যা উভয় পক্ষই ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেছে।
তবে, দ্রুত কোনো সমাধানে পৌঁছানো যাবে কিনা, সে বিষয়ে তেহরান এখনো নিশ্চিত নয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সম্প্রতি বলেছেন, তিনি এ বিষয়ে ‘অতিরিক্ত আশাবাদীও নন, আবার হতাশও নন’।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে বেরিয়ে আসেন এবং ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। তিনি আবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ সৃষ্টির নীতি পুনরায় চালু করেছেন।
বর্তমান মার্কিন প্রশাসন চাইছে ইরান যেন উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা বন্ধ করে। তাদের ধারণা, এর মাধ্যমে পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তারা নিষেধাজ্ঞার বিনিময়ে কিছু শর্ত মানতে রাজি আছে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তারা এমন নিশ্চয়তা চায়, যাতে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে না আসে।
আব্বাস আরাকচি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার নিয়ে কোনো আপস করা হবে না।
জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইরান সম্ভবত পরমাণু বোমা তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
তিনি আরও জানান, তেহরান সফরের সময় তিনি ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। গ্রোসি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে এবং চুক্তি করার জন্য তাদের হাতে বেশি সময় নেই।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান