আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পথে? ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন ফায়সালা!

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চলছে, কিন্তু দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে তা কঠিন পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। উভয় দেশই তাদের দাবিতে অনড় রয়েছে, যার ফলে আলোচনার পঞ্চম রাউন্ড পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।

আলোচনার মূল বিষয় হলো ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ইরান যেন এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়।

অন্যদিকে, ইরান বলছে তারা তাদের বেসামরিক প্রয়োজনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে এবং এটি অব্যাহত রাখতে চায়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এই দাবিকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন।

জানা গেছে, ওমানের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিতব্য এই আলোচনায় ২০১৫ সালের জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিওপিএ) -এর অনুরূপ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।

এই চুক্তির মাধ্যমে ইরানের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিনিময়ে দেশটির পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার কথা রয়েছে। তবে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেন এবং ইরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চান, যা ইরানের বেসামরিক পরমাণু শক্তি কর্মসূচিকে সমর্থন করবে, কিন্তু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অনুমতি দেবে না।

তবে, তারা এ বিষয়ে সহজে রাজি হবে না বলেও মনে করছেন।

অন্যদিকে, ইরান বারবার বলছে, তাদের পরমাণু উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ এবং তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে চায়, যা তাদের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের নির্মাণ খাতের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান একে ‘নিন্দনীয়, অবৈধ ও অমানবিক’ বলে অভিহিত করেছে।

এই আলোচনার ফল উভয় পক্ষের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে তেহরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির সম্ভাবনা হ্রাস করতে, যা আঞ্চলিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু করতে পারে।

অন্যদিকে, ইরান চাইছে তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে, যা তাদের অর্থনীতিকে চাঙা করবে।

যদি আলোচনা ব্যর্থ হয়, তবে এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসন আলোচনার ব্যর্থতার জন্য সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে। ইসরায়েল, যারা ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনাকে সমর্থন করে না, তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, ইরান যদি পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চায়, তবে তারা তাতে বাধা দেবে।

বর্তমানে, উভয় পক্ষই তাদের অবস্থানে অনড় থাকায় আলোচনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন দেখার বিষয়, আলোচনার পরবর্তী রাউন্ডে কোনো সমঝোতা হয় কিনা, নাকি উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *