ইরানের পরমাণু অধিকার: ওমানের আলোচনা শুরুর আগেই তেহরানের কড়া বার্তা!

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি: আলোচনার টেবিলে অচলাবস্থা, উত্তেজনা বাড়ছে

তেহরান, ইরান – ইরানের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে, তাদের পারমাণবিক ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার কোনো আলোচনার বিষয় হতে পারে না। ওমানের রাজধানী মাস্কাটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চতুর্থ দফা পরোক্ষ আলোচনার প্রাক্কালে ইরানের পক্ষ থেকে এমন মন্তব্য করা হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে মাস্কাটে অবস্থান করছেন।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন, বেসামরিক উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার ইরানের রয়েছে এবং এটি কোনো আলোচনার বিষয় হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, এই কাজটি ইরানের জনগণের একটি বড় অর্জন। এর জন্য অনেক মূল্য দিতে হয়েছে।

২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর, ইরানের উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যদিও এই চুক্তিতে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করার শর্ত ছিল, কিন্তু দেশটির বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি ছিল। বর্তমানে ইরান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯0 শতাংশের কাছাকাছি। তবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, তেহরান এখনো পর্যন্ত বোমা তৈরির কোনো চেষ্টা করেনি।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে চাইছে। তারা দেশটির গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো, যেমন – নাতানজ, ফোরদো এবং ইসফাহান-এর কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানের ওপর অর্থনৈতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে। দেশটির ট্রেজারি বিভাগ সম্প্রতি একটি চীনা রাসায়নিক গ্রুপ এবং তিনটি বন্দর টার্মিনালের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ইরানের তেল রপ্তানি সীমিত করা।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় চালু করেন। এর আগে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি একতরফাভাবে সরিয়ে নিয়েছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৩.৬৭ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল।

আলোচনা শুরুর আগে, মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেছেন। ওমানের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিতব্য এই আলোচনাগুলোতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *