ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ৪৬
ইরানের বৃহত্তম বাণিজ্যিক বন্দর, বন্দর আব্বাসের শহীদ রাজাই বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। শনিবারের এই ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ জনে।
আহত হয়েছেন ১ হাজারের বেশি মানুষ। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, আহতদের মধ্যে অনেককে চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো ১২০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বন্দরটি হরমুজ প্রণালীর কাছে অবস্থিত, যে পথ দিয়ে বিশ্বের মোট তেলের এক-পঞ্চমাংশ সরবরাহ করা হয়।
বিস্ফোরণের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের ধারণা, একটি বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্য মজুত করার গুদামে আগুন লাগার কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসকান্দার মোমেনির মতে, নিরাপত্তা বিধিনিষেধ না মানা এবং দায়িত্বে অবহেলার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।
দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিস্ফোরণের কারণ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে ইরান সরকার ক্ষেপণাস্ত্রের জ্বালানি বিষয়ক কোনো দুর্ঘটনার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান আহতদের দেখতে বন্দর আব্বাসের হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করেছেন।
বিস্ফোরণের পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এলাকার স্কুল ও অফিস বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং বাসিন্দাদের বাইরে বের না হওয়ার জন্য সতর্ক করেছে। জরুরি প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সোমবারকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে এবং হরমুগান প্রদেশে তিন দিনের শোক পালন করা হচ্ছে।
এই বিস্ফোরণের ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন ওমানে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা চলছে। উভয় পক্ষই আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে।
ইরানি কর্তৃপক্ষ যদিও এই বিস্ফোরণকে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছে, তবে এটি এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন দেশটির আঞ্চলিক শত্রু ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের ছায়া যুদ্ধ চলছে।
অতীতে ইরান ইসরায়েলকে এ ধরনের হামলার জন্য দায়ী করেছে।
২০২০ সালে ইসরায়েল শহীদ রাজাই বন্দরে সাইবার হামলা চালিয়েছিল বলে জানা যায়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা