ইরানি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ: রহস্যে মোড়া!

ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় অন্তত ৭০ জন নিহত এবং ১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

বন্দরটি সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীর অফিসের তত্ত্বাবধানে থাকা একটি চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন, ‘বুনিয়াদ মোস্তাজাফান’ (Foundation of the Oppressed)-এর মালিকানাধীন এলাকায় অবস্থিত ছিল।

খবর অনুযায়ী, বন্দরটির কেন্দ্রবিন্দু ছিল ‘সিনা পোর্ট অ্যান্ড মেরিন সার্ভিসেস ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি’র একটি টার্মিনাল। এই টার্মিনালটি বুনিয়াদ মোস্তাজাফানের (Foundation of the Oppressed) অধীনে পরিচালিত হয়।

উল্লেখ্য়, বুনিয়াদ মোস্তাজাফান (Foundation of the Oppressed) ইরানের একটি প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান, যা দেশটির অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ধারণা করা হয়, এর সম্পদের পরিমাণ কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, যা বাংলাদেশি টাকায় কয়েক হাজার কোটি টাকার বেশি)।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই ফাউন্ডেশনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তাদের অভিযোগ, এই ফাউন্ডেশন ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে সাহায্য করে এবং রাজনৈতিক মিত্রদের সুবিধা দিয়ে থাকে।

এছাড়াও, এই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (IRGC) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার এবং দেশের বাইরের কার্যক্রম দেখাশোনা করে থাকে।

বিস্ফোরণের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বন্দরটিতে সম্ভবত ক্ষেপণাস্ত্রের কঠিন জ্বালানির জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক উপাদান আসছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

যদিও ইরানের কর্তৃপক্ষ এই দাবি অস্বীকার করেছে।

এই ঘটনার পর, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চীন এবং ইরানের মধ্যে রাসায়নিক উপাদান আদান-প্রদান নিয়ে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে ‘সোডিয়াম পারক্লোরেট’ এবং ‘ডিওকটাইল সেবাসেট’-এর মতো রাসায়নিক দ্রব্য, যা ক্ষেপণাস্ত্রের কঠিন জ্বালানি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে কর্তৃপক্ষের তদন্ত চলছে। তবে ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক।

বিস্ফোরণের ফলে অ্যামোনিয়া, সালফার ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর গ্যাস বাতাসে মিশেছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লেবাননের বৈরুত বন্দরে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট-এর কারণে হওয়া বিস্ফোরণের ঘটনার সাথেও এর মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *