ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেশেকিয়ান তাঁর এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। বরখাস্ত হওয়া ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ‘বিলাসবহুল’ এক সফরে আন্টার্কটিকা ভ্রমণ করেছেন। শনিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রেসিডেন্ট।
সরকারের সংসদ বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহরাম দাবিরিকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট পেশেকিয়ান। প্রেসিডেন্টের মতে, দাবিরির এই আন্টার্কটিকা সফর ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং কোনোভাবেই তা সমর্থনযোগ্য নয়।
প্রেসিডেন্ট পেশেকিয়ান তাঁর আদেশে উল্লেখ করেন, “যে সরকার প্রথম শিয়া ইমাম (ইমাম আলী)-এর আদর্শ অনুসরণ করতে চায়, সেই সরকারের কর্মকর্তাদের এমন বিলাসবহুল ভ্রমণ, এমনকি যদি তা ব্যক্তিগত অর্থায়নেও হয়ে থাকে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের দেশের মানুষের উপর যখন চরম অর্থনৈতিক চাপ, তখন এমনটা হওয়াটা দুঃখজনক।”
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা IRNA-কে উদ্ধৃত করে জানা যায়, প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, শাহরাম দাবিরির দীর্ঘদিনের সরকারি কাজের অভিজ্ঞতা, তাঁর এই অনৈতিক কাজের প্রমাণ দেয়। প্রেসিডেন্টের মতে, কর্মকর্তাদের সবসময় সততা, ন্যায়বিচার এবং জনগণের প্রতি দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে।
যদিও শাহরাম দাবিরি তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবে তিনি প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট পেশেকিয়ান আরও বলেন, অর্থনৈতিক সংকটকালে কর্মকর্তাদের ‘সাধারণ জীবনযাপন’ করার যে নীতি, দাবিরির এই কাজ সেই নীতির পরিপন্থী।
দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশটির মুদ্রাস্ফীতিও বাড়ছে। রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ইরানি মুদ্রা রিয়ালের দাম রেকর্ড পরিমাণে কমে যায়। ১ মার্কিন ডলারের বিপরীতে ১,০৩৯,০০০ রিয়াল বিনিময় হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা IRNA-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেন, প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে, তিনি কারো সঙ্গে কোনো আপস করেন না। তাঁর কাছে কার্যকারিতা, ন্যায়বিচার, সততা এবং জনস্বার্থই প্রধান।
তথ্যসূত্র: সিএনএন