ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি এক বক্তব্যে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি কোনো আলোচনায় বসতে রাজি নয় ইরান।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাঠানো একটি চিঠির প্রতিক্রিয়ায় এমন সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ওমান সালতানাতের মাধ্যমে পাঠানো প্রতিক্রিয়ায়, ওয়াশিংটনের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার সম্ভাবনা এখনো খোলা রাখা হয়েছে।
তবে ২০১৮ সালে তেহরানের সঙ্গে বিশ্বশক্তির করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে ট্রাম্প একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর, এমন কোনো আলোচনা এখনো পর্যন্ত সফল হয়নি।
ঐ ঘটনার পর থেকে, আঞ্চলিক উত্তেজনা বেড়েছে। এর জেরে সমুদ্রে এবং স্থলভাগে বিভিন্ন ধরনের হামলা হয়েছে।
এরপর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হয়, যেখানে ইসরায়েল ইরানের সমর্থনপুষ্ট প্রতিরোধ অক্ষের নেতাদের ওপর হামলা চালায়।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তীব্র বিমান হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর সামরিক পদক্ষেপের ঝুঁকি এখনো বিদ্যমান।
প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “আমরা আলোচনা এড়িয়ে চলি না, বরং অতীতের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণেই আমাদের সমস্যা হয়েছে।
তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) প্রমাণ করতে হবে যে তারা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে পারে।”
হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে এই ঘোষণার কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ট্রাম্পের এই চিঠি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে তারা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেবে না।
এর ফলে তেহরান প্রায় অস্ত্র-গ্রেডের কাছাকাছি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করলে, সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য়, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম দেশগুলোই কেবল এই কাজটি করে থাকে।
ইরান দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে, যদিও দেশটির কর্মকর্তারা ক্রমশ বোমা তৈরির হুমকি দিচ্ছেন।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফেরার পর, তার প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে বলেছে যে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতে হবে।
জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার ফেব্রুয়ারির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান দ্রুতগতিতে অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি ইউরেনিয়াম উৎপাদন বাড়িয়েছে।
এছাড়াও, ট্রাম্প ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাগদাদে ড্রোন হামলায় ইরানের শীর্ষ জেনারেলকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন