ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা? চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানির!

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হলে দেশটির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে পারে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সূত্রে এমনটাই খবর পাওয়া গেছে।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে দেশটির পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করার বিনিময়ে তাদের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন।

এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

ইউরোপীয় দেশগুলো মনে করে, ইরানের পক্ষ থেকে তাদের পারমাণবিক কার্যক্রমের বিষয়ে সুস্পষ্ট এবং নির্ভরযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নল বারোট ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের বলেন, “ইরান যদি কোনো সুস্পষ্ট পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আমরা আগস্টের শেষ নাগাদ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করব।”

অন্যদিকে, ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা পুনরায় শুরু করতে তারা প্রস্তুত, তবে সেক্ষেত্রে তাদের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পুনরাবৃত্তি হবে না এমন নিশ্চয়তা দিতে হবে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, “ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কারণে বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।”

সম্প্রতি, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের কিছু পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষতি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা শুরুর আগে, গত জুন মাসে ইসরায়েলি হামলা হয়। এরপর থেকে পরমাণু বিষয়ক আলোচনা কার্যত স্থগিত রয়েছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং ইরানের কর্মকর্তারা এখনও সেই ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণে কাজ করছেন। ইরান এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছে।

এই পরিস্থিতিতে, নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হলে বিশ্ব অর্থনীতিতে, বিশেষ করে জ্বালানি ও বাণিজ্য খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়তে পারে, যা আমদানি-রপ্তানি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

বর্তমানে, বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘে আলোচনা চলছে এবং দেশগুলো তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *