ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি দেশটির পরমাণু কেন্দ্রগুলোর ওপর মার্কিন বিমান হামলার জের ধরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের এই নির্দেশ দেশটির পার্লামেন্টের অনুমোদন করা একটি আইনের পরেই এসেছে।
এই আইন অনুযায়ী, IAEA-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার কথা বলা হয়েছে। ইরানের একটি সাংবিধানিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইতিমধ্যে এই আইনের অনুমোদন দিয়েছে।
তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে IAEA-এর কার্যক্রমের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ভিয়েনা-ভিত্তিক IAEA দীর্ঘদিন ধরে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে আসছে।
এই বিষয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
২০১৫ সালে বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরানকে ৩.৬৭ শতাংশ হারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
এই সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানোর জন্য যথেষ্ট, তবে অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের থেকে অনেক কম। চুক্তিতে ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুত উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করার এবং সেন্ট্রিফিউজের ব্যবহার সীমিত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
তেহরানের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে IAEA-কে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
তবে, ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেন। তিনি চুক্তির দুর্বলতা এবং ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করার অভিযোগ করেন।
এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে এবং সমুদ্র ও স্থলভাগে বিভিন্ন আক্রমণ হয়।
বর্তমানে ইরান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা অস্ত্র-গ্রেডের কাছাকাছি। তাদের কাছে একাধিক পারমাণবিক বোমা তৈরির মতো পর্যাপ্ত মজুতও রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
ইরান দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তবে, IAEA, পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা এবং অন্যান্যরা মনে করে, তেহরান ২০০৩ সাল পর্যন্ত একটি সংগঠিত পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়েছিল।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস