আলোচনা নয়, যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া বার্তা ইরানের! পরমাণু চুক্তি নিয়ে নয়া মোড়?

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতি চলছে, তবে বৈঠকের ধরন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সরাসরি আলোচনার কথা বলা হলেও, ইরানের দাবি, তারা কেবল পরোক্ষ আলোচনার জন্য প্রস্তুত।

খবর অনুসারে, ওমানে এই আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি আলোচনার ঘোষণা দিলেও, তেহরান এতে কিছুটা বিস্মিত হয়।

ইরানের কর্মকর্তাদের মতে, আলোচনার ধরন গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আলোচনার ফলপ্রসূতা, উভয় পক্ষের সদিচ্ছা এবং একটি সমাধানে পৌঁছানোর আগ্রহই আসল বিষয়।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “আলোচনার ধরন সরাসরি হোক বা পরোক্ষ, তাতে কিছু যায় আসে না।

গুরুত্বপূর্ণ হলো, আলোচনা ফলপ্রসূ হবে কিনা এবং উভয়পক্ষ কতটা আন্তরিক।

২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি (Joint Comprehensive Plan of Action – JCPOA) থেকে ট্রাম্প ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।

এই চুক্তিতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সীমিত করার বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা ছিল।

তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্থানের পর উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে পড়ে।

বর্তমানে, ইরান চাইছে আলোচনার মাধ্যমে তাদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সমঝোতায় আসতে।

আলোচনা প্রসঙ্গে ইরানের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং বৈধ।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব (UN Security Council resolution 2231) এর বৈধতা নিশ্চিত করেছে।

ইরানের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, কারো কোনো প্রশ্ন বা সন্দেহ থাকলে তারা তা স্পষ্ট করতে প্রস্তুত।

এদিকে, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (International Atomic Energy Agency – IAEA) -এর ফেব্রুয়ারীর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইরানের ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখান থেকে ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধকরণ – যা অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়, তা তুলনামূলকভাবে সহজ।

৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইরানের ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ছিল ২৭৪.৮ কিলোগ্রাম, যা আগের তিন মাসের তুলনায় ৯২.৫ কিলোগ্রাম বেশি।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এই আলোচনা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উভয় দেশের অবস্থান এবং আলোচনার ফলাফল এই অঞ্চলের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

এখন দেখার বিষয়, আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশ একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে পারে কিনা।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *