ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে আলোচনা বর্তমানে এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি, যাদের ভিন্ন প্রেক্ষাপট থেকে আসা সত্ত্বেও, এই জটিল কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
অন্যদিকে ইরানের হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অভিজ্ঞ কূটনীতিক আব্বাস আরাকচি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের হয়ে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন স্টিভ উইটকফ। ব্রঙ্কস-এ জন্ম নেওয়া এই ব্যবসায়ীকে ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের মতো সংকটগুলো সমাধানেও দায়িত্ব দিয়েছেন।
তাঁর প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানের হয়ে আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আব্বাস আরাকচি। তিনি এক সময় ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিগত কয়েক দশক ধরে ইরানের কূটনৈতিক মহলে তাঁর পরিচিতি রয়েছে।
২০১৫ সালে বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তি গঠনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
উভয় পক্ষের মধ্যে এই আলোচনা ফলপ্রসূ হবে কিনা, তা নিয়ে অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে।
কারণ, এর ওপর নির্ভর করছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে কিনা, অথবা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় সামরিক হামলা চালাবে কিনা।
এই পরিস্থিতিতে, আসন্ন আলোচনার দ্বিতীয় দফা ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরাকচি দীর্ঘদিন ধরে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত।
২০০৮ সালে তিনি জাপানে ইরানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উইকিলিস-এর প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসও তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতার প্রশংসা করেছিল।
কঠিন পরিস্থিতিতেও আলোচনার টেবিলে শান্ত ও দৃঢ় থাকার দক্ষতার জন্য তাঁর পরিচিতি রয়েছে।
অন্যদিকে, স্টিভ উইটকফ-এর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
ট্রাম্পের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তিনি পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এমনকি, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বন্ধের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে মধ্যস্থতা করারও চেষ্টা করেছিলেন।
উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা কঠিন হলেও, এর ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, এই আলোচনার ওপর শুধু ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নয়, বরং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও বিশ্ব শান্তির বিষয়টিও নির্ভরশীল।
আলোচনায় ইরানের পক্ষ থেকে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নমনীয়তা প্রদর্শনের সম্ভাবনা এখনো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতিতে, উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা কতটা সম্ভব হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
পরিশেষে, আন্তর্জাতিক শান্তি এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নীতি সবসময়ই সমর্থনযোগ্য।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস