পৃথিবীর ‘সবচেয়ে মিষ্টি’ ডলফিন: বিলুপ্তির পথে, এখনো কি কিছু বাঁকি?

বাংলার নদ-নদী এবং মোহনায় বাস করা ইরাবতী ডলফিন আজ বিলুপ্তির পথে। মায়ানমারের ইরাবতী নদী, ইন্দোনেশিয়ার মাহাকাম নদী এবং কম্বোডিয়ার মেকং নদীর পরেই বাংলাদেশের সুন্দরবনে এদের দেখা মেলে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সুন্দরবনের এই ডলফিনগুলি টিকিয়ে রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, বিশ্বজুড়ে এদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে।

ইরাবতী ডলফিন দেখতে অনেকটা গোলগাল এবং বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের হয়ে থাকে। এরা মানুষের সঙ্গে মিশে মাছ ধরে এবং খেলা করে।

স্থানীয় জেলেদের সাথে এদের এক বিশেষ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। অনেক সময়, ডলফিনগুলো মাছ শিকারের জন্য জেলেদের সাহায্য করে।

বিনিময়ে, তারা জালের আশেপাশে থাকা মাছগুলো খায়।

কিন্তু বর্তমানে এই ডলফিনদের প্রধান বিপদ হল—নদীতে পাতা জাল। বিশেষ করে গিল নেট নামক ফাঁদগুলোতে আটকা পড়ে অনেক ডলফিনের মৃত্যু হচ্ছে।

এছাড়া, নদীর দূষণ, জলপ্রবাহে পরিবর্তন এবং অবৈধভাবে মাছ ধরার কারণেও এরা ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা (আইইউসিএন)-এর মতে, ইরাবতী ডলফিন একটি বিপন্ন প্রজাতি।

তবে সুন্দরবনের ডলফিনগুলোর সংখ্যা এখনো কিছুটা বেশি, প্রায় ৬,০০০। এই কারণে, বাংলাদেশের জন্য এদের রক্ষা করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডলফিন রক্ষার জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এর মধ্যে অন্যতম হলো—জালমুক্ত এলাকা তৈরি করা এবং জেলেদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করা।

সুন্দরবনে যাতে নির্বিচারে জাল পাতা বন্ধ করা যায়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করাটাও জরুরি, যাতে তারা ডলফিনদের গুরুত্ব বোঝে এবং তাদের সংরক্ষণে এগিয়ে আসে।

ইরাবতী ডলফিন শুধু একটি প্রজাতি নয়, বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও বটে। স্থানীয় লোককথায় এদের নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত আছে।

তাই, এদের বাঁচিয়ে রাখা মানে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করা, যা আমাদের সবার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অপরিহার্য।

তথ্য সূত্র: বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *