গাজায় অ্যাম্বুলেন্সের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা, জাতিসংঘ ও হামাসের নিন্দা
গাজা উপত্যকায় অ্যাম্বুলেন্সের ওপর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলার ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। গত রোববার রাফাহ শহরের তাল আল-সুলতান এলাকায় এই ঘটনা ঘটে, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী ‘সন্দেহজনক যান’ চিহ্নিত করে গুলি চালায়।
হামাস এই ঘটনাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং এতে একজন নিহতের খবর নিশ্চিত করেছে।
ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে উদ্ধারকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম এক বিবৃতিতে জানান, “আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে সুরক্ষাপ্রাপ্ত উদ্ধারকর্মীদের ওপর এই হামলা জেনেভা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধের শামিল।”
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা প্রথমে হামাসের কয়েকটি যান লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং এরপর “কয়েকটি সন্দেহজনক যান” তাদের দিকে অগ্রসর হতে দেখে পাল্টা গুলি চালায়।
তাদের দাবি, হামলার শিকার হওয়া যানগুলোর মধ্যে কিছু অ্যাম্বুলেন্স ও অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ছিল। যদিও তারা হামলার কারণ হিসেবে ‘সন্দেহজনক যান’-এর কথা উল্লেখ করেছে, তবে হতাহতের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে তাল আল-সুলতা এলাকার ছয়জন উদ্ধারকর্মীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
পরে তাদের দলনেতার মরদেহ এবং উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত একটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি পাওয়া যায়, যা ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়েছে।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একটি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক অফিসের প্রধান টম ফ্লেচার এক বিবৃতিতে জানান, গত ১৮ মার্চ থেকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় শত শত শিশুসহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
তিনি বলেন, “হাসপাতালে রোগীরা নিহত হচ্ছেন, অ্যাম্বুলেন্সের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে, এমনকি প্রথম সারির উদ্ধারকর্মীরাও নিহত হচ্ছেন।”
ফ্লেচার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবিক আইনের মৌলিক নীতিগুলো সমুন্নত রাখতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গাজায় চলমান এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসা কর্মী ও উদ্ধারকারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও চিকিৎসা কর্মীদের সুরক্ষা দেওয়া জরুরি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান