আতঙ্কে বৈরুত! ইসরায়েলের বোমা হামলায় কেঁপে উঠল শহর, ধ্বংসযজ্ঞ!

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন।

নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির পর থেকে এই নিয়ে তৃতীয়বার ইসরায়েল বৈরুতের উপর হামলা চালালো।

রবিবার চালানো এই হামলায় একটি বিশাল এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

প্রেসিডেন্ট আউন ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন ইসরায়েলকে তাদের এই ধরনের হামলা বন্ধ করতে বাধ্য করে।

উল্লেখিত, গত বছরের ২৭শে নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাস্তবায়নে এই দেশগুলোই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েল লেবাননের স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে এবং উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, যা পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য “প্রকৃত হুমকি”।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করার একটি অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। তবে তারা তাদের দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।

হামলার পর কোনো অতিরিক্ত বিস্ফোরণের খবরও পাওয়া যায়নি।

ঘটনার পরপরই স্থানীয় কিছু গণমাধ্যমে ঘটনার ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, যা আল জাজিরা যাচাই করেছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদক জেইনা খোদর জানিয়েছেন, “আমরা কিছুক্ষণ আগে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটিতে গিয়েছিলাম।

সেখানে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে এবং আমাদের দ্রুত এলাকা ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। আশেপাশের ভবনগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জানালায় ভাঙন ধরেছে, কাঁচের টুকরোগুলো চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, এবং কিছু গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

খোদর আরও বলেন, “এই হামলার আগে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল, তবে কোনো উসকানি ছাড়াই এই ঘটনা ঘটেছে।

নভেম্বরে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর থেকে বৈরুতের দক্ষিণে এর আগেও কয়েকবার হামলা হয়েছে, তবে এবার কোনো রকেট হামলা হয়নি।

এখানেকার মানুষেরা উদ্বিগ্ন যে ইসরায়েল যেন নতুন করে যুদ্ধের নিয়ম তৈরি করছে এবং এর মাধ্যমে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।”

অবসরপ্রাপ্ত লেবানীয় সেনা জেনারেল এলিয়াস হান্না আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, বৈরুতে ইসরায়েলের এই হামলা এবং এর আগে দেওয়া সতর্কবার্তা হিজবুল্লাহ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে হতে পারে।

তিনি বলেন, এই ধরনের অভিযানকে “সিস্টেম পরীক্ষা” হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

হান্না আরও যোগ করেন, “যদি কোনো ব্যক্তি বা স্থাপনা সম্পর্কে আপনাদের কাছে তথ্য থাকে, তাহলে আপনারা সতর্কবার্তা পাঠান এবং দেখেন ওই কর্মকর্তা বা নেতারা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান। তারা কি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যান?”

হান্নার মতে, এই ধরনের অভিযান তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারে, যা গোয়েন্দা তথ্যের জন্য “উভয় পক্ষের বিজয়” হতে পারে।

গত এক বছরের যুদ্ধে ইসরায়েলি ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান প্রায়ই বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়েছে, যেখানে হিজবুল্লাহর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।

এমনকি ইসরায়েল সেখানে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের কয়েকজনকে, যেমন মহাসচিব হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র লেবাননকে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার জন্য চাপ দিচ্ছে, তবে প্রেসিডেন্ট আউন সতর্ক করেছেন যে এটি একটি “সংবেদনশীল” বিষয়, যা দেশের শান্তি বজায় রেখে পরিচালনা করতে হবে।

হিজবুল্লাহ, যারা নিজেদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি হিসেবে দেখে, তারা অস্ত্র ত্যাগ করতে রাজি নয়।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *