গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত, মানবিক সংকট তীব্র।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অবরুদ্ধ এই অঞ্চলে খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং জ্বালানির তীব্র সংকট চলছে, যা সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার ভোর থেকে খান ইউনিস শহরের কাছে ড্রোন হামলায় তিনজন এবং আবাসিক টাওয়ারের কাছে বোমা হামলায় আরও দুইজন নিহত হন। এছাড়া, উত্তর গাজার জেইতুন এলাকার একটি বাড়িতে আর্টিলারি হামলায় দুই জন নিহত হয়েছে।
বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের কাছে ইসরায়েলি যুদ্ধ বিমানের বোমা হামলায় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী খান ইউনিসে অবস্থিত ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতেও হামলা চালিয়েছে।
গাজায় গত ৭০ দিন ধরে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাদ্য, পানি, ওষুধ ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে সেখানকার প্রায় ২৩ লাখ মানুষ মারাত্মক খাদ্য সংকটে দিন কাটাচ্ছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) সতর্ক করে জানিয়েছে, অবরোধ দীর্ঘায়িত হলে ফিলিস্তিনিদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। সংস্থাটি অবিলম্বে ত্রাণ সরবরাহ শুরু করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের এই হামলাকে ‘জটিল অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা গাজা সম্পূর্ণভাবে দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে এবং ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
এছাড়া, তারা মানবিক সহায়তা বিতরণের দায়িত্ব নেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছে, যা জাতিসংঘের নীতিমালার পরিপন্থী বলে আন্তর্জাতিক মহল থেকে তীব্র সমালোচনা করা হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধাদের ইসরায়েলে চালানো হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৫২ হাজার ৮২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪ জন আহত হয়েছেন। ওই হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে গাজায় বন্দী করা হয়।
মানবিক সংকট মোকাবিলায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন পোপ লিও ১৪। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় তাদের স্থল অভিযান আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করছে।
এছাড়া, সৈন্যদের মধ্যে অসন্তোষ কমাতে দেশটির সরকার রিজার্ভ সেনাদের জন্য প্রায় ৩ বিলিয়ন শেকেল (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বেশি) মূল্যের একটি সুবিধা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য সফরের ঘোষণা করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় যুদ্ধ এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর কিছু মতপার্থক্য রয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা