গাজায় এখনো কি জীবিত? ইসরায়েল যাদের মুক্তি চায়

পশ্চিম এশিয়ার অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে, ইসরায়েলে বন্দী থাকা কিছু জিম্মিদের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত। হামাসের ৭ই অক্টোবর, ২০২৩-এর ভয়াবহ হামলার পর থেকে তাদের মুক্তির জন্য অপেক্ষা করছে পরিবারগুলো।

তাদের মধ্যে অনেকে এখন পর্যন্ত ফেরা পর্যন্ত জীবিত আছে কিনা, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

বর্তমানে গাজায় ৪৮ জন জিম্মি রয়েছে বলে জানা গেছে, যাদের মধ্যে এক জন সৈন্যের দেহও রয়েছে। ইসরায়েল নিশ্চিত করেছে যে, তাদের মধ্যে অন্তত ২৫ জন হয় ৭ই অক্টোবরের হামলায় নিহত হয়েছে, অথবা বন্দী অবস্থায় মারা গেছে।

বাকি প্রায় ২০ জনের ভাগ্যে কি ঘটেছে, তা এখনও অজানা। এদের মধ্যে একজন নারী জিম্মি আছেন, যিনি সম্ভবত বন্দী অবস্থায় মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (Associated Press) রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েল মনে করে এখনও ২২ জন জিম্মি জীবিত আছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হলো:

  • **মাতান অ্যাংরেস্ট (২২):** একজন ইসরায়েলি সেনা সদস্য। তাকে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে অপহরণ করা হয়। তার মা আনাট অ্যাংরেস্ট নিয়মিত ছেলের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছেন।
  • **গালি বারমান ও জিব বারমান (২৮):** তারা যমজ ভাই। ৭ই অক্টোবরের হামলায় গাজার সীমান্তবর্তী কিবুতজ কাফার আজা (kibbutz Kfar Aza) থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা আলাদাভাবে বন্দী রয়েছে।
  • **এলকানা বোহবট (৩৬):** নোভা সঙ্গীত উৎসবে (Nova music festival) যোগ দিতে গিয়ে অপহৃত হন। হামাস বিভিন্ন সময়ে তার ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে তাকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
  • **রম ব্রাভল্যাভস্কি (২১):** নোভা উৎসবে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করতেন। হামাস কর্তৃক প্রকাশিত একটি ভিডিওতে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় দেখা গেছে।
  • **নিমrod কোহেন (২১):** একজন সেনা সদস্য। তার পরিবার জানিয়েছে, তিনি রুবি’স কিউব (Rubik’s cube) ভালোবাসতেন। অপহরণের সময় তার ট্যাঙ্ক থেকে একটি পোড়া রুবি’স কিউব উদ্ধার করা হয়েছিল।
  • **আরিেল কুনিয়ো (২৮):** নির ওজ কিবুতজ থেকে অপহৃত হন। তার বান্ধবী আরবيل ইহুদ (Arbel Yehoud) ও তার ভাই দোলেভও (Dolev) অপহৃত হন।
  • **ডেভিড কুনিয়ো (৩৫):** আরিয়েলের ভাই। নির ওজ কিবুতজ থেকে স্ত্রী শ্যারন ও তাদের যমজ সন্তানের সঙ্গে তাকে অপহরণ করা হয়।
  • **এভিয়াটার ডেভিড (২৪):** নোভা সঙ্গীত উৎসবে অপহৃত হন। হামাস কর্তৃক প্রকাশিত একটি ভিডিওতে তাকে দুর্বল অবস্থায় দেখা গেছে।
  • **গাই গিলবোয়া-দালাল (২৪):** নোভা উৎসবে অপহৃত হন।
  • **মাক্সিম হারকিন (৩৭):** নোভা উৎসবে যোগ দিতে গিয়ে অপহৃত হন। তিনি ইউক্রেন থেকে ইসরায়েলে এসে বসবাস শুরু করেন।
  • **ইটান হর্ন (৩৮):** ৭ই অক্টোবর তার ভাই ইয়ারের সঙ্গে নির ওজ কিবুতজে বেড়াতে গিয়ে অপহৃত হন।
  • **বিপিন জোশি (২৪):** নেপালের নাগরিক। তিনি ছাত্র বিনিময় কর্মসূচির (student exchange) অংশ হিসেবে ইসরায়েলে এসেছিলেন।
  • **সেগেভ কালফোন (২৭):** নোভা সঙ্গীত উৎসবে অপহৃত হন। তিনি উদ্বেগজনিত সমস্যায় (anxiety disorder) ভুগছিলেন।
  • **বার কুপারস্টেইন (২৩):** নোভা উৎসবে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করতেন।
  • **ওমরি মিরান (৪৮):** নাহাল ওজ কিবুতজ থেকে অপহৃত হন। হামাস সদস্যরা তার পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে এবং তা ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করে।
  • **ইটান মোর (২৫):** নোভা সঙ্গীত উৎসবে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করতেন।
  • **তামির নিমরোদি (২০):** গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত একটি ক্রসিং থেকে অপহৃত হন।
  • **জোসেফ-চাইম ওহানা (২৫):** নোভা সঙ্গীত উৎসবে বারটেন্ডারের কাজ করতেন।
  • **আলোন ওহেল (২৪):** নোভা সঙ্গীত উৎসবে অপহৃত হন। তিনি জার্মান ও সার্বিয়ান নাগরিক।
  • **আভিনাটান ওর (৩২):** নোভা সঙ্গীত উৎসবে বান্ধবী নোয়া আর্গামানির (Noa Argamani) সঙ্গে অপহৃত হন।
  • **মাতান জাঙ্গাউকার (২৫):** নির ওজ কিবুতজ থেকে অপহৃত হন।

বর্তমানে একটি যুদ্ধবিরতি চলছে এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য আলোচনা চলছে। তবে, জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা তাদের আপনজনদের নিরাপদে ফিরে আসার অপেক্ষায় দিন গুনছেন।

তথ্য সূত্র: Associated Press

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *