গাজায় সামরিক অভিযান আরও বড় আকারে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রীসভা। একইসাথে, সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য ত্রাণ সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়েও নতুন পরিকল্পনা করা হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে পাওয়া খবরে জানা যায়, গাজায় সামরিক কার্যক্রমের বিস্তৃতি ঘটানো হবে এবং ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণাঞ্চলে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণের বিষয়টিও নতুন করে সাজানোর কথা ভাবা হচ্ছে। যদিও ত্রাণ সরবরাহ পুনরায় চালুর বিষয়ে মন্ত্রিসভার অভ্যন্তরে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
কিছু মন্ত্রী ত্রাণ সরবরাহের বিপক্ষে মত দিয়েছেন। তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ইসরায়েলের ত্রাণ সরবরাহ করা উচিত বলে মত দিয়েছেন সামরিক কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের দাবি, হামাসকে চাপে ফেলতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, এর ফলে গাজার বাসিন্দাদের মধ্যে খাদ্য সংকট তৈরি হতে পারে।
তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগও এনেছে।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও গাজায় ত্রাণ পাঠানোর জন্য নতুন একটি কৌশল তৈরির চেষ্টা করছে। এই প্রক্রিয়ায় হামাসকে এড়িয়ে সরাসরি ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।
এই ত্রাণ বিতরণের কাজটি দেখাশোনা করার জন্য একটি বেসরকারি ফাউন্ডেশনকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এমন কোনো উদ্যোগে অংশ নেবে না, যা মানবিক সহায়তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও ত্রাণ সরবরাহ নিয়ে বিতর্ক চলছে। দেশটির একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ত্রাণ সরবরাহ পুনরায় চালুর বিরোধিতা করেন কট্টরপন্থী মন্ত্রীরা। তাঁদের যুক্তি ছিল, কোনো ধরনের ত্রাণ সরবরাহ করা উচিত নয়।
অন্যদিকে, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান ত্রাণ সরবরাহের পক্ষে যুক্তি দেখান।
গাজায় চলমান সংঘাতের কারণে এরই মধ্যে সেখানকার ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মানবিক ত্রাণ বন্ধ করে দেওয়ার ফলে সেখানকার মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন