গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা, বন্দী বিনিময় চুক্তিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার ভিত্তিতে এই চুক্তি হতে চলেছে।
খবর সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিনের মধ্যেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং উভয়পক্ষ তাদের বন্দীদের মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর খবর অনুযায়ী, এই চুক্তির ফলে হামাস তাদের হাতে থাকা জীবিত সকল জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে।
বিনিময়ে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনি কারাবন্দীদের মুক্তি দেবে এবং গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে। এই চুক্তির প্রথম পর্যায়ে, ইসরায়েলি সেনা গাজার অধিকাংশ এলাকা থেকে সরে আসবে।
এই চুক্তির খবরটি আসার পর উভয় পক্ষের মানুষজনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি এই চুক্তির অনুমোদন দেবেন।
অন্যদিকে, হামাস নেতারা বলেছেন, তারা চান ইসরায়েল যেন কোনো প্রকার বিলম্ব না করে দ্রুত সেনা প্রত্যাহার ও ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করে।
গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এই চুক্তি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকে এই যুদ্ধ বিরতিকে স্বাগত জানালেও, তাদের মধ্যে অনেকেই ইসরায়েলের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা নিয়ে সন্দিহান।
গাজার খান ইউনিসের নাসির হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ড. আহমেদ আল-ফাররা বলেছেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি চুক্তিটি নিয়ে সন্দিহান, তবে এখনও তিনি আশাবাদী।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এই যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজার বিশাল এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে।
উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার জন্য মিশরে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানেই এই চুক্তির চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
এই পরিকল্পনায় গাজায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করারও প্রস্তাব রয়েছে, যার প্রধান দায়িত্বে থাকবে বিভিন্ন আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সেনারা।
এছাড়াও, গাজার পুনর্গঠনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে অর্থ সংগ্রহের কথাও বলা হয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে এখনো অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে।
গাজায় ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হওয়া মানুষজন তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা চান, দ্রুত এই যুদ্ধ শেষ হোক এবং তাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হোক।
এই চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। তবে, চুক্তির শর্তগুলো পুরোপুরিভাবে কার্যকর করা এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা উভয় পক্ষের জন্যই একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস