ইসরায়েল ঘোষণা করেছে যে তারা একাই নিজেদের রক্ষা করবে, কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছে। এই চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ইসরায়েলের জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের এই বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের বিরুদ্ধে তাদের সামরিক অভিযান বন্ধ করবে, যার বিনিময়ে হুতি বিদ্রোহীরা ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ওপর হামলা করা থেকে বিরত থাকবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “ইসরায়েল একাই নিজেদের রক্ষা করবে।” তিনি আরও বলেন, “যদি আমাদের আমেরিকান বন্ধুরা আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়, তাহলে তো ভালোই। আর যদি না-ও আসে, আমরা একাই নিজেদের রক্ষা করতে প্রস্তুত।”
অন্যদিকে, হুতি বিদ্রোহীরা এই চুক্তিকে তাদের বিজয় হিসেবে দেখছে। তাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ আলী আল-হুতি বলেছেন, এই চুক্তির ফলে “যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অস্থায়ী সত্তা (ইসরায়েল)-কে সমর্থন করা এবং নেতানিয়াহুর ব্যর্থতা” প্রমাণিত হয়েছে। হুতি বিদ্রোহীরা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের হামলা অব্যাহত রাখবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে একপ্রকার পাশ কাটিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মধ্যপ্রাচ্য দূত ডেনিস রস উল্লেখ করেছেন, অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে অন্ধকারে রেখে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা এবং ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ইসরায়েলকে আগে জানানো হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে, হুতি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত থাকবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ইসরায়েলের উদ্বেগকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এই চুক্তি করেছে। যদিও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি, তবে নেতানিয়াহু অতীতেও ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, “ইসরায়েলকে যেকোনো হুমকি ও শত্রুর বিরুদ্ধে একাই নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হতে হবে। অতীতেও এমন অনেক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়েছে, ভবিষ্যতেও আমরা তা করতে প্রস্তুত।”
উল্লেখ্য, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে হুতি গ্রুপকে ‘বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর সেই তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেন। পরবর্তীতে ট্রাম্প আবার তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেন।
তথ্য সূত্র: CNN