যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত, ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলা, বাড়ছে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান জোরদার হয়েছে। একই সময়ে, ইয়েমেনে হাউছি বিদ্রোহীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে, ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের দিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আকাশেই প্রতিহত করে। গত মঙ্গলবার গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এটি ছিল ইসরায়েলের দিকে ছোড়া দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।
হাউছি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন এবং গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় তারা এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে তেল আবিব ও জেরুজালেমে সাইরেন বাজানো হয়।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশের আগেই প্রতিহত করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
হাউছিরা দাবি করেছে, তারা তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছুড়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বুধবার এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইয়েমেনে হাউছিদের ওপর বিমান হামলা জোরদার করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় হাউছি বিদ্রোহীরাও যুক্তরাষ্ট্রের নৌ লক্ষ্যবস্তুতে হামলার ঘোষণা দিয়েছে।
তারা লোহিত সাগরে ইউএসএস হ্যারি ট্রুম্যান বিমানবাহী জাহাজ এবং আরও কিছু মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে হাউছি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে “সম্পূর্ণভাবে নির্মূল” করারও হুমকি দিয়েছেন।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় গত মঙ্গলবার ৪ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি ছিল যুদ্ধের সবচেয়ে ভয়াবহ দিনগুলোর একটি।
এরপর থেকে উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় আরও বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় মানবিক পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে এবং খাদ্য সংকট তীব্র হচ্ছে।
ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় ইতোমধ্যে বহু মানুষ নিহত হয়েছে। হাউছি নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে চালানো হামলায় দেশটির রাজধানী সানার একটি আবাসিক এলাকায় সাত নারী ও দুই শিশু আহত হয়েছে।
এছাড়াও, আল-জাওফ, হোদাইদাহ এবং সাদাতেও হামলা চালানো হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান এই উত্তেজনা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন