আতঙ্কে বিশ্ব: ইরান-সংঘাতের জেরে তেলের বাজারে বড় উল্লম্ফন!

ইরানে ইসরায়েলের হামলার জেরে তেলের দামে উল্লম্ফন, এশিয়ার শেয়ার বাজারে পতন

ঢাকা, [তারিখ দিন মাস বছর] : মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। একইসাথে এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ার বাজারেও দরপতন দেখা গেছে।

ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার পরেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যা উভয় দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের বেঞ্চমার্ক হিসেবে পরিচিত ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেল প্রতি প্রায় ৭৩.১৮ ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৩.৮২ ডলার বেশি।

এছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়েছে, যা ব্যারেল প্রতি প্রায় ৭১.৯৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই হিসেবে, দাম বেড়েছে প্রায় ৩.৯৩ ডলার বা ৫.৮ শতাংশ।

শেয়ার বাজারের চিত্রও ছিল হতাশাজনক। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ০.৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭,৮৩৪.২৫-এ।

দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ০.৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২,৮৯৪.৬২-তে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ০.৯ শতাংশ কমে ২৩,৮৩১.৪৮-এ নেমে এসেছে।

চীনের সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স ০.৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩,৩৭৮.৭৬-এ। অস্ট্রেলিয়ার এস&পি/এএসএক্স ২০০ সূচক সামান্য ০.২ শতাংশ কমে ৮,৫৪৭.৪০-এ এসে দাঁড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের এই হামলা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে।

তবে, এশীয় বাজারগুলোতে এর প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে, কারণ তাদের এই সংঘাতের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক কম এবং সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ছে।

অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় সেখানকার শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রভাব দেখা গেছে।

এস&পি ৫০০ সূচক সামান্য বেড়েছে, যেখানে ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ এবং নাসডাক কম্পোজিট সূচকে সামান্য পতন লক্ষ করা গেছে।

তবে, প্রযুক্তি কোম্পানি ওরাকলের মুনাফা ও আয়ের পরিমাণ বিশ্লেষকদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যাওয়ায় তাদের শেয়ারের দাম ১৩.৩ শতাংশ বেড়েছে।

এদিকে, বোয়িং-এর একটি বিমানের দুর্ঘটনায় ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হওয়ায় কোম্পানিটির শেয়ারে দরপতন হয়েছে।

বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ এখনো জানা যায়নি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারে দরপতন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষ করে, এর ফলে আমদানি খরচ বাড়তে পারে, যা দেশের বাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

এছাড়া, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা দেশের বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নিলে তা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হতে পারে।

তবে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি, যা বাজারের জন্য উদ্বেগের কারণ।

আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা এবং তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে সরকারের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাণিজ্য নীতি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *