ইসরায়েলে গত এক দশকের মধ্যে ভয়াবহ দাবানল দেখা দিয়েছে, যা জেরুজালেমের দিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছেন।
দাবানলের কারণে বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং কয়েক হাজার মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে।
বুধবার জেরুজালেমের কাছাকাছি মহাসড়কগুলোতে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
ইসরায়েলের জরুরি উদ্ধারকারী সংস্থা ‘ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম’ (এমডিএ) জানিয়েছে, কয়েক’শ বেসামরিক লোক এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে রয়েছে।
সংস্থাটি প্রায় ২৩ জন আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিয়েছে, যাদের মধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ধোঁয়া ও পোড়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এদের মধ্যে ২ জন গর্ভবতী মহিলা এবং ১ বছরের কম বয়সী ২ শিশুও রয়েছে।
দাবানলের কারণে জেরুজালেম ও তেল আবিবের মধ্যে প্রধান সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জনবসতি খালি করে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় দমকলকর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের প্রধান ইয়েল কাস্পি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “বর্তমান আবহাওয়ার কারণে আমাদের বিমানগুলো তেমন কোনো কাজ করতে পারছে না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো জীবন বাঁচানো।
তিনি আরও জানান, সম্ভবত গত এক দশকের মধ্যে ইসরায়েলে এটিই সবচেয়ে বড় অগ্নিকাণ্ড।
ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গভির ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, অগ্নিসংযোগের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে।
পুলিশ পূর্ব জেরুজালেমের এক বাসিন্দাকে আটক করেছে, যিনি শহরের দক্ষিণাঞ্চলে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছিলেন। তবে, কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে এর কোনো যোগসূত্র স্থাপন করা হয়নি।
উদ্ধারকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করেছে এবং আহতদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
উচ্চ তাপমাত্রা ও শক্তিশালী বাতাসের কারণে বনাঞ্চলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গ্রিস, সাইপ্রাস, ক্রোয়েশিয়া, ইতালি ও বুলগেরিয়াসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া থেকে সাহায্যকারী বিমান আসার কথা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান