ইসরায়েলের নিরাপত্তা প্রধান পদে নতুন নিয়োগ দিলেন নেতানিয়াহু, বিতর্ক অব্যাহত।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে নজরদারি ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার দায়িত্বে থাকা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান হিসেবে নতুন মুখ আনছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। দেশটির নৌবাহিনীর সাবেক কমান্ডার ভাইস অ্যাডমিরাল এলি শারভিটকে এই পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি, নিরাপত্তা বিভাগের বর্তমান প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন নেতানিয়াহু। এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে বিরোধীরা বলছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই এমনটা করা হয়েছে। তাদের মতে, বারকে সরানোর সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের স্বাধীন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আঘাত এবং এটি এমন এক সময়ে নেওয়া হচ্ছে, যখন বার এবং তার সংস্থা কাতারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের সংযোগ খতিয়ে দেখছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের হাইকোর্ট এখনো শুনানির জন্য অপেক্ষা করছে, তবে নেতানিয়াহুকে নতুন প্রধান নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাই করতে কোনো বাধা দেয়নি আদালত।
এই ঘটনার রেশ ধরেই, কাতারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর অফিসের সম্পর্ক নিয়ে তদন্তের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি পুলিশ। সোমবার এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, এই মামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, কাতার, যারা হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী, তারা নেতানিয়াহুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পাবলিক রিলেশনস ক্যাম্পেইন পরিচালনার জন্য ভাড়া করেছিল।
এদিকে, গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের অধিকাংশ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গত মে মাসে রাফাহতে বড় ধরনের অভিযান চালায় ইসরায়েল, যার ফলে শহরটির একটি বড় অংশ ধ্বংস হয়ে যায়।
অন্যদিকে, হামাসের হাতে বন্দী থাকা সাবেক এক ইসরায়েলি জিম্মি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। গত মাসে মুক্তি পাওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে ইয়ারদেন বিভাস জানান, ট্রাম্পই একমাত্র ব্যক্তি যিনি নেতানিয়াহু এবং হামাসকে পুনরায় যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি করাতে পারেন। বিভাস বলেন, হামাসের গোপন টানেলে বন্দী অবস্থায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনি জীবন নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন।
এছাড়াও, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ১৫ জন উদ্ধারকর্মীর ঘটনার ফুটেজ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। নিহতদের মধ্যে রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশনের আটজন কর্মী, ছয়জন বেসামরিক প্রতিরক্ষা সদস্য এবং জাতিসংঘের একজন কর্মী ছিলেন। জাতিসংঘের মানবিক দপ্তর জানিয়েছে, ২০১৭ সালের পর এটি তাদের কর্মীদের ওপর চালানো সবচেয়ে মারাত্মক হামলা।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্দেহজনকভাবে হেডলাইট ও জরুরি সংকেত ছাড়াই এগিয়ে আসায় কয়েকটি গাড়ির ওপর গুলি চালানো হয়েছিল। সামরিক বাহিনীর দাবি, নিহতদের মধ্যে একজন হামাস সদস্য এবং আরও আটজন জঙ্গি ছিল।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস