গাজা শহরে আবারও অভিযান জোরদার করার প্রেক্ষাপটে সেখানকার কিছু অংশ থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। বুধবার (তারিখ উল্লেখ করা যেতে পারে) এই নির্দেশ জারি করা হয়।
হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক চাপ বাড়ানোর অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজা সিটির জেইতুন, তেল আল-হাওয়া এবং অন্যান্য এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে হবে। এই এলাকাগুলোতে আগে থেকেই ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালিয়েছে।
সামরিক বাহিনী আরও বলেছে, ওই এলাকা থেকে রকেট হামলা হলে তারা দ্রুত জবাব দেবে। তাই বাসিন্দাদের দক্ষিণের দিকে সরে যেতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেয় ইসরায়েল। এর পরেই গাজায় নতুন করে বিমান হামলা চালানো হয়।
এতে বহু ফিলিস্তিনি নিহত হন। ইসরায়েল এখনও পর্যন্ত হামাসের হাতে বন্দী থাকা ৫৯ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে চাইছে।
তাদের মধ্যে ২৪ জন এখনো জীবিত আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জিম্মিদের মুক্তি এবং হামাসকে নিরস্ত্র করার পাশাপাশি তাদের নেতাদের নির্বাসনে পাঠানোরও দাবি জানাচ্ছে ইসরায়েল।
অন্যদিকে, হামাস জানিয়েছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার না করা হলে তারা জিম্মিদের মুক্তি দেবে না।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়। হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল, যাদের অধিকাংশই ছিল বেসামরিক নাগরিক।
এরপর ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৫০,০০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
তবে নিহতদের মধ্যে কতজন বেসামরিক নাগরিক এবং কতজন যোদ্ধা, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে বিরল প্রতিবাদ দেখা গেছে। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনিরা হামাসের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে।
উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া শহরে এই বিক্ষোভে কয়েকশ মানুষ অংশ নেয়।
বিক্ষোভকারীরা “যুদ্ধ বন্ধ করো”, “আমরা মরতে চাই না” এবং “আমাদের শিশুদের রক্ত এত সস্তা নয়” – এমন বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহন করে।
কিছু ভিডিওতে “হামাস নিপাত যাক” বলেও শ্লোগান দিতে শোনা যায়।
তবে হামাস সমর্থকরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলেও জানা গেছে।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে গাজার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে বিপর্যস্ত। সেখানকার বাসিন্দারা খাদ্য, পানি, চিকিৎসা এবং আশ্রয়ের জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করছেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা গাজায় ত্রাণ সরবরাহ করার চেষ্টা করছে, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস