১৩ বছর বয়সে গ্রেপ্তার হওয়া ফিলিস্তিনি মুক্তি, ফিরলেন পরিবারে!

ফিলিস্তিনের কিশোর বন্দী, আহমদ মানাসরা’র মুক্তি: মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্বেগ

জেরুজালেমে এক ঘটনার সূত্রে ১৩ বছর বয়সে গ্রেফতার হওয়া ফিলিস্তিনের নাগরিক আহমদ মানাসরা’কে প্রায় এক দশক কারাবাসের পর মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। তার আইনজীবী খালেদ জাবারকা সিএনএনকে জানিয়েছেন, আহমদ এখন তার পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন।

২০১৫ সালে পূর্ব জেরুজালেমে এক ছুরি হামলার ঘটনার পর মানাসরা’কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় তার এক চাচাতো ভাই, হাসান, জড়িত ছিলেন। ঘটনার সময় হাসানকে গুলি করে হত্যা করা হয়, আর মানাসরাকে একটি গাড়ি চাপা দেয়। যদিও মানাসরা সরাসরি ছুরিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তবুও তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মানাসরার গ্রেফতারের ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। ঘটনার পর আহত অবস্থায় কাতরা অবস্থায় থাকা মানাসরাকে নিয়ে কিছু ভিডিও প্রকাশিত হয়, যেখানে দেখা যায় উত্তেজিত জনতা তাকে গালিগালাজ করছে। ফিলিস্তিনি বন্দী সোসাইটির মতে, অন্যান্য ফুটেজে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দ্বারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে, যা ছিল মানসিক চাপের মধ্যে এবং দুর্বল অবস্থায়।

আদালতে শুনানির পর ২০১৬ সালে মানাসরাকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও ইসরায়েলি আদালত স্বীকার করেছিল যে মানাসরা ছুরিকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন না। পরে আপিলের পর তার সাজা কমিয়ে সাড়ে নয় বছর করা হয়।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে মানাসরার মুক্তি চেয়ে আসছিল। তাদের উদ্বেগের কারণ ছিল, কারাগারে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে এবং তাকে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছিল। তাছাড়াও, তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও সিজোফ্রেনিয়াতে ভুগছিলেন।

মানাসরার আইনজীবী জানান, “শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকে তার অবস্থা খুবই খারাপ। মাথায় আঘাত এবং মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা তো ছিলই, তার উপর নির্জন কারাবাস এবং শিশুকালে কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের শিকার হতে হয়েছে তাকে।”

ইসরায়েলের কারা কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার মানাসরার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, “ইসরায়েল একটি আইনের দেশ এবং এখানে কাউকে নির্যাতন করা হয় না।”

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *